ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রশক্তিতে পরিণত হলে তা হবে নিজেদের শাসনব্যবস্থার মৃত্যুঘণ্টা:রুবিওর সতর্কবার্তা

প্রকাশিত: ২২:০৯, ২২ জুন ২০২৫; আপডেট: ২২:০৯, ২২ জুন ২০২৫

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রশক্তিতে পরিণত হলে তা হবে নিজেদের শাসনব্যবস্থার মৃত্যুঘণ্টা:রুবিওর সতর্কবার্তা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে অটল থাকে, তবে তা দেশটির শাসনব্যবস্থার শেষ পরিণতির সূচনা হবে। ফক্স নিউজের ‘সানডে মর্নিং ফিউচারস’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।

রুবিও বলেন, সাম্প্রতিক বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে যদি দেশটি প্রকৃত অর্থেই পারমাণবিক শক্তিতে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগোয়, তাহলে তা নিজেদের জন্য চরম ঝুঁকি ডেকে আনবে।

তার ভাষায়, "দিনের শেষে যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক শক্তি হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞায় অনড় থাকে, আমি মনে করি সেটাই তাদের শাসনব্যবস্থার পতনের সূচনা হবে। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, তারা যদি তা বাস্তবায়ন করতে চায়, তাহলে এটি হবে সেই শাসনের সমাপ্তি।"

তিনি জানান, শনিবার রাতের হামলাই একমাত্র নয়, ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরেই নানা কারণে পিছিয়ে পড়ছে। "শুধু গত রাতের হামলায় নয়, এর আগেও ইসরায়েল চমৎকার কিছু অপারেশন চালিয়েছে, যার ফলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বড় ধাক্কা লেগেছে," বলেন রুবিও।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারকে একান্তভাবে নিষেধ করছে না, তবে পারমাণবিক অস্ত্রের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য।"যদি তারা চায় পারমাণবিক চুল্লি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য, সেটি অনেক দেশই করে থাকে কিন্তু সেজন্য নিজস্বভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই," বলেন রুবিও।

তিনি সতর্ক করে জানান, যদি ইরান পর্বতের নিচে লুকিয়ে রাখা কোনো গোপন পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনা করতে চায়, যেখানে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকরা কেবল তখনই যেতে পারবেন, যখন তেহরান অনুমতি দেবে, তবে সেটি হবে বিশ্বব্যাপী চরম উদ্বেগের কারণ।

রুবিও বলেন, "এই শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক, সহিংস এবং উগ্র—ইরানি জনগণ নয়, বরং তাদের সরকারের কথা বলছি। যদি তারা এমন এক গোপন কর্মসূচি চালাতে চায়, যা বিশ্বের অন্যান্য বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে মেলে না, বরং বোমা তৈরির মতো দেখায়, তাহলে তারা কেবল আমাদের নয়, বরং বিশ্বের আরও অনেক দেশের সঙ্গেই সমস্যায় পড়বে।"

জানা গেছে, শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় লক্ষ্য করে হামলা চালায় নাটানজ, এসফাহান এবং ফোর্দো। ফোর্দোর পর্বতের নিচে অবস্থিত স্থাপনায় ছয়টি ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা নিক্ষেপ করা হয়। অন্য দুই জায়গায় নিক্ষেপ করা হয় ২০টির বেশি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র।

এই বোমা হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি প্রবেশ করল। গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের ওপর বিমান হামলা চালানোর মাধ্যমে এই যুদ্ধের সূচনা করে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে এগোয়, তাহলে সেটা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্যই বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। আর এই মুহূর্তে পরিস্থিতির গতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের পরিধি আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

 

 


সূত্র:The Hill

আফরোজা

×