
ছবি: সংগৃহীত
প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদানের মধ্যে কালোজিরা বা ব্ল্যাক সিড (Nigella sativa) এক অত্যন্ত মূল্যবান নাম। এই কালো রঙের ক্ষুদ্র বীজ থেকেই প্রস্তুত হয় কালোজিরার তেল, যা স্বাস্থ্যরক্ষায় বহুবিধ গুণে পরিপূর্ণ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ইউনানি পদ্ধতি এবং আধুনিক বিকল্প চিকিৎসাব্যবস্থায় কালোজিরার তেলকে বলা হয় “সব রোগের ঔষধ, মৃত্যুর ব্যতীত”। গবেষণায়ও মিলেছে এর প্রভাবের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ।
1.প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধক
বিশেষজ্ঞদের মতে, কালোজিরার তেলে থাকা থাইমোকুইনোন (Thymoquinone) নামক উপাদান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর।
2.ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত অল্প মাত্রায় কালোজিরার তেল গ্রহণে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস পায়। পাশাপাশি এটি শরীরে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়ক।
3.ত্বক ও চুলের যত্নে
রূপচর্চাতেও কালোজিরার তেল সমান জনপ্রিয়। এতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-সেপটিক ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ, ফুসকুড়ি ও ত্বকের চুলকানি কমাতে কার্যকর। চুল পড়া রোধ, খুশকি দূরীকরণ এবং চুল ঘন করতে এই তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
4.হজম ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা নিরাময়ে
গ্রামীণ জনজীবনে বহু আগে থেকেই কালোজিরার তেল ঠান্ডা, কাশি, অ্যাজমা ও হজমের সমস্যায় ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি পাকস্থলীকে সক্রিয় করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় স্বস্তি দেয়।
ব্যবহার ও সতর্কতা
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চা চামচ কালোজিরার তেল গ্রহণ স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হতে পারে। তবে অতিরিক্ত গ্রহণ, বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ ও গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কালোজিরার তেল একটি প্রাকৃতিক আশীর্বাদ, তবে তা সঠিক মাত্রায় ও উপায়ে ব্যবহার করলেই এর সুফল পাওয়া সম্ভব। পল্লি অঞ্চল থেকে শহরের বাজার—সব জায়গায়ই আজকাল পাওয়া যাচ্ছে এই তেল, যা ক্রমেই মানুষের ঘরোয়া চিকিৎসার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছে।
Mily