
ছবি: সংগৃহীত।
ঈদ, পার্বণ বা পারিবারিক অনুষ্ঠান—যে কোনো আনন্দঘন সময়েই খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। কখনও কখনও তা এতটাই বেড়ে যায় যে আমরা বুঝে উঠার আগেই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি খেয়ে ফেলি। ফলাফল? পেট ফেঁপে থাকা, গ্যাস, বুকজ্বালা, বমি ভাব, ক্লান্তি কিংবা ঘুম ঘুম ভাব। এসব সমস্যাকে হালকাভাবে নিলে পরবর্তী সময়ে হজমজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশি খেয়ে অস্বস্তি হলে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই মিলতে পারে দ্রুত উপশম।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, “অতিরিক্ত খাওয়ার পর অনেকেই পানি পান বন্ধ করে দেন, এটা একেবারেই ভুল অভ্যাস। হালকা গরম পানি হজমে সহায়তা করে এবং পেটের অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে। তবে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক বেশি পানি পান করা ঠিক নয়। খাওয়ার ৩০-৪৫ মিনিট পর পানি পান করা উপকারী।”
খাওয়ার পর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়া বা সোফায় বসে থাকা নয়, বরং কিছুক্ষণ হেঁটে নেওয়াই ভালো। গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, “খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট ধীরে হাঁটলে পাচনতন্ত্র সক্রিয় হয় এবং গ্যাস বা ফোলাভাব কমে। তবে দৌড়ানো বা জোরে হাঁটা নয়, শুধু হালকা গতি বজায় রাখলেই যথেষ্ট।”
অনেকেই বেশি খাওয়ার পর চা পান করেন, কিন্তু এটি ভুল সিদ্ধান্ত। চায়ের ক্যাফেইন হজমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এর পরিবর্তে আদা, পুদিনা বা মৌরি দিয়ে তৈরি হালকা হরবাল চা খাওয়া যেতে পারে। এসব উপাদান হজমে সহায়ক এবং পেটের অস্বস্তি কমায়।
পেঁপে, আনারস বা কলা—এই ফলগুলো হজমে বিশেষভাবে উপকারী। এগুলোর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম পেটে জমে থাকা খাবার দ্রুত ভাঙতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, “অতিরিক্ত মাংসজাতীয় খাবারের পর একটুকরো পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস গ্যাস-অম্বলের ঝুঁকি কমায়।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, অতিরিক্ত খাওয়ার পর ভুলবশত যেসব কাজ করা হয় তা এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন— সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়া, ঠান্ডা পানি বা কার্বনেটেড ড্রিংকস খাওয়া, কোমরবন্ধ বা টাইট জামাকাপড় পরা, ভরপেট খাওয়ার পর আরও মিষ্টি খাওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত খাওয়া খুব স্বাভাবিক। তবে নিয়মিত হলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই অস্বস্তি হলে উপরের পরামর্শগুলো মেনে চলা এবং ভবিষ্যতে সচেতন থাকা জরুরি। অতিরিক্ত অস্বস্তি বা পেটে ব্যথা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক। কোনো শারীরিক অস্বস্তি বা স্বাস্থ্য সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মিরাজ খান