ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাচ্চাকে মেন্টালি স্ট্রং বানাতে যা এড়িয়ে চলবেন

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৯, ৫ জুন ২০২৫

বাচ্চাকে মেন্টালি স্ট্রং বানাতে যা এড়িয়ে চলবেন

ছবি: সংগৃহীত

আজকের প্রতিযোগিতামূলক ও দ্রুতগতির সমাজে মানসিকভাবে দৃঢ় হয়ে ওঠা শুধু বড়দের জন্যই নয়, শিশুদের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। শিশুর মানসিক শক্তি গড়ে তোলার জন্য শুধু পুষ্টিকর খাবার বা ভালো স্কুলই যথেষ্ট নয়—প্রয়োজন সঠিক মানসিক গঠন। অনেক সময় আমরা না জেনেই এমন কিছু আচরণ করি, যা শিশুর আত্মবিশ্বাসে আঘাত করে, মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শিশুকে মানসিকভাবে দৃঢ় করতে গেলে কোন কোন বিষয় এড়িয়ে চলা উচিত।

১. অতিরিক্ত সমালোচনা

শিশুরা শেখার পর্যায়ে থাকে, ভুল করবেই। কিন্তু প্রতিটি ভুলের জন্য যদি তাদের কঠোরভাবে সমালোচনা করা হয়, তাহলে তারা ভয় পেতে শুরু করে। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তাই ভুল হলে গঠনমূলক সমালোচনা করুন, তাদের শেখার সুযোগ দিন।

২. তুলনা করার প্রবণতা

“দেখো তোমার বন্ধু কত ভালো রেজাল্ট করেছে” — এ ধরনের তুলনা শিশুর মনে হীনম্মন্যতা তৈরি করে। এতে সে নিজেকে সবসময় অপর্যাপ্ত মনে করে এবং নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। প্রত্যেক শিশুই আলাদা, তাদের নিজস্ব গুণাবলি ও সক্ষমতা রয়েছে। তাই তুলনার পরিবর্তে উৎসাহ দিন।

৩. সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ

বাচ্চারা যখন ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিতে শেখে—যেমন কোন জামাটা পরবে, কোন খেলনাটা পছন্দ করছে—তখনই তাদের স্বাধীনচেতা মানসিকতা গড়ে ওঠে। সব সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করলে তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং নিজের ওপর আস্থা হারায়।

৪. আবেগ প্রকাশে বাধা দেওয়া

অনেক সময় অভিভাবকরা বলেন, “এত কাঁদছো কেন?”, “এই বয়সে আবার রাগ কিসের?” — এসব কথা শিশুদের আবেগ দমন করতে শেখায়। কিন্তু আবেগ প্রকাশ না করতে করতে তারা ভিতরে ভিতরে মানসিকভাবে চাপে পড়ে যায়। শিশুদের অনুভূতির মূল্য দিতে হবে এবং তা প্রকাশে উৎসাহিত করতে হবে।

৫. অতিরিক্ত সুরক্ষা

সবসময় আগ বাড়িয়ে সমস্যার সমাধান করে দেওয়া কিংবা বেশি 'protective' হওয়া শিশুকে বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অক্ষম করে তোলে। ভুল হোক, ধাক্কা খাক—সেখান থেকে শেখাই জীবনের আসল পাঠ।

৬. শুধুমাত্র সাফল্যের উপর জোর

শুধু ভালো নম্বর, পুরস্কার বা জয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলে শিশুর কাছে ব্যর্থতা হয়ে ওঠে ভয়ের বিষয়। ফলে তারা ঝুঁকি নিতে চায় না। ব্যর্থতাও শেখার একটা অংশ—এই শিক্ষা শিশুর মানসিক দৃঢ়তা বাড়ায়।

শিশুকে মানসিকভাবে শক্ত করে তুলতে চাইলে প্রথমেই চাই সহানুভূতিশীল এবং সচেতন অভিভাবকত্ব। ভুলত্রুটি, আবেগ, চিন্তা—সবকিছুকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলেই ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হবে এক আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ় মননের মানুষ।

আসিফ

×