ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্যাকেটজাত চিপস খাওয়া কেন ক্ষতিকর?

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ২৭ মে ২০২৫

প্যাকেটজাত চিপস খাওয়া কেন ক্ষতিকর?

ছবি: সংগৃহীত।

স্বাদের ভিন্নতা ও সহজলভ্যতার কারণে প্যাকেটজাত আলুর চিপস বর্তমানে শিশুদের অন্যতম প্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে। নাস্তা, টিভি দেখা কিংবা খেলার সময় চিপস খাওয়ার প্রবণতা শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দেখা যায়। তবে এই জনপ্রিয় খাবারটির ভেতরেই লুকিয়ে আছে একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। সম্প্রতি নিবন্ধিত ওরাল ও ডেন্টাল সার্জন ডা. কোরবী জুলিয়াত এক সতর্কবার্তায় এসব ঝুঁকির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন।

ডা. কোরবী জানান, প্যাকেটজাত চিপসে উচ্চ মাত্রায় ক্যালরি, সোডিয়াম ও ফ্যাট থাকে। এগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডেন্টাল ক্যারিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি, হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।

তিনি বলেন, “চিপস খাওয়ার পর এর কণা দাঁতের আবরণে লেগে চিনিতে পরিণত হয় এবং সেখানে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়ে দাঁতের ক্ষয় বা ক্যারিস তৈরি করে।” তিনি আরও যোগ করেন, অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরে রক্তচাপ বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের কারণ হতে পারে।

চিপসকে একটি কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ প্রক্রিয়াজাত খাবার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতিরিক্ত চিপস খেলে ওজন বেড়ে যায়, ফলে শিশুদের মধ্যে ওবেসিটি ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, এক ধরনের আসক্তি তৈরি হতে পারে যা শিশুদের অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

“চিপস খাওয়ার ফলে পেট ভরা লাগায় অনেক শিশু নিয়মিত খাবার যেমন লাঞ্চ বা ডিনার বাদ দেয়, যা থেকে অপুষ্টির ঝুঁকি দেখা দেয়,” বলেন ডা. কোরবী।

তিনি আরও জানান, অধিকাংশ চিপস উচ্চ তাপে তেলে ভাজা হয়, যেখানে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়—এটি শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। চিপসে ব্যবহৃত তেলেও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ বাড়ায়। চিপসে ‘অ্যক্রিলামাইড’ নামের একটি রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া যায়, যা কারসিনোজেনিক বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে পরিচিত।

হারভার্ড মেডিকেল স্কুলের এক গবেষণার বরাতে তিনি জানান, চিপসে থাকা ট্রান্সফ্যাট মেয়েদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এই স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে ডা. কোরবী বলেন, “শিশুদের চিপসের পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার, ফলমূল এবং সৃজনশীল উপহার যেমন রং পেন্সিল, গল্পের বই দেওয়া যেতে পারে।” তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, “বাবা-মায়েরা যদি নিজেরাও চিপস খাওয়া কমিয়ে দেন, শিশুরাও সহজেই এই অভ্যাস ত্যাগ করতে পারবে।”

তিনি পরামর্শ দেন, শিশুরা যদি চিপস খায়, তবে খাওয়ার পরপরই মুখ কুলি করা, ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার এবং দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

সূত্র: https://short-link.me/-aoS

মিরাজ খান

×