
..
এখন প্রায় দিনেই ঝুম বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায় প্রকৃতিকে। তাই বলে দৈনন্দিন কাজকর্ম তো আর ফেলে রাখা যায় না। কর্মের প্রয়োজনে হোক আর লেখাপড়ার প্রয়োজনে, প্রতিদিনই ছোট থেকে বড় সবারই বাহিরে যেতে হয় নানা কাজে। আর বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট নোংরা পানি ও কাদায় থাকে সয়লাব। যা পায়ে লেগে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সংক্রমণ। বর্ষাকালে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পায়ে নোংরা পানি লাগে, যা থেকে দেখা দেয় নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ। তাই এই সময় পায়ের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।
পা রাখতে হবে শুকনা : বর্ষার দিনে পা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলে যত দ্রুত সম্ভব তা শুকিয়ে নিন। পা ভেজা থাকলে দুর্গন্ধ হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফাটল ধরা, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
তবে সবচেয়ে ভালো হয় হালকা কুসুম গরম পানিতে অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে পা ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে। এতে সব জীবাণু মরে যায়। এরপর পা শুকনা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
খালি পায়ে হাঁটা যাবে না : অনেকেই আছেন যারা ঠান্ডা মেঝেতে বা বর্ষায় ভেজা ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটেন। বর্ষায় এই কাজ করা যাবে না। খালি পায়ে হাঁটার ফলে পায়ে অজান্তেই কোনো কিছু বিধে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। পায়ে ছত্রাক সংক্রমণে খুব চুলকানি হয়। এই চুলকানি থেকে সাময়িক উপশম পেতে সমপরিমাণ আপেল সাইডার ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, পায়ে যেকোনো ধরনের সংক্রমণে সবার আগে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতেই হবে।
ময়েশ্চারাইজার : পায়ের যত্নে আর্দ্রতা ধরে রাখা জরুরি। এ জন্য ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে পা সুন্দর ও মসৃণ থাকবে। প্রতিদিন দুবার শুকনা পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। পায়ের নখ বড় থাকলে এতে ময়লা জমতে পারে। তাই পায়ের নখ ছোট রাখতে হবে।
সপ্তাহে একটা দিন লবণ ও শ্যাম্পু মেশানো কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর হালকা ভেজা অবস্থায় পায়ে স্ক্রাব ব্যবহার করুন। এই স্ক্রাব ঘরে থাকা চিনি বা লবণের সঙ্গে নারিকেল বা জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন। এ ছাড়া ছোট ওয়াশক্লথ বা তোয়ালে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে কিছুটা নিংড়িয়ে পায়ে ঘষলেও স্ক্রাবের মতো কাজ করবে। এতে পায়ের মৃত কোষ দূর হবে। সবশেষে পা শুকিয়ে একটি ভালো ফুট ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগালেই চলবে। শুধু শীতকালে নয়, বর্ষাকালেও অনেকের পা ফাটে, তারও সমাধান হবে।
হাতের যত্ন : মানব সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ হাত। আর কাজের সব ঝক্কি ঝামেলা যায় হাতের ওপর দিয়ে। দিন শেষে হাতের ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ ও শুষ্ক। হাতের যতœ নিতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ আজিমুন্নেছা তুলি।
শুষ্কতা কমাতে স্ক্রাবিং : যেকোনো কাজ শেষে কয়েক দফা হাত ধোয়া হয়। এতে করে হাত রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। তাই হাত ধোয়ার পর স্ক্রাবিং করতে হবে। এক্ষেত্রেও অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ লবণ বা চিনি মিশিয়ে তৈরি করা স্ক্রাব দিয়ে হাত ম্যাসাজ করতে হবে দুই-তিন মিনিট। এরপর ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মাস্ক : সারা দিনের ধকলে অনেক সময় হাতে ও নখে মসলার দাগ হয়ে যায়। এজন্য বিশেষ মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। দুই চামচ বেকিং সোডা, দুই চামচ লেবুর রস ও সামান্য শ্যাম্পু মিশিয়ে হাতে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে নখ ও হাত আলতো করে ব্রাশ করতে হবে। এতে সহজে হাতের দাগ চলে যাবে।
ময়েশ্চারাইজার : হাত ময়েশ্চারাইজ রাখতে বাজারে এখন বিভিন্ন ভালো মানের হ্যান্ডক্রিম পাওয়া যায়। দামও হাতের নাগালে। এই ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে পারেন। না হলে ময়েশ্চারাইজিং বডিলোশন লাগালেও চলবে। ঘরোয়া উপায়ে হাত ময়েশ্চারাইজার রাখতে আধা কাপ চালের গুঁড়া, এক চামচ বেসন, আধা চামচ কাঁচা হলুদের রস, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও আধা চামচ গ্লিসারিন। মিশ্রণটি হাতে ব্যবহার করে হালকা শুকিয়ে এলে কুসুম গরম পানিতে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফ্যাশন প্রতিবেদক