
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান সময়ে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ, দখলদারি এবং প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। তবে নতুন ভূমি আইন ও প্রচলিত আইনের যৌথ প্রয়োগে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের প্রচলিত তামাদি আইন ও নতুন ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ অনুযায়ী, শুধুমাত্র একটি বৈধ প্রমাণপত্র থাকলেই আপনি একটি জমির বৈধ মালিক হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারেন।
🔍 তিন ধরনের প্রমাণপত্রের মধ্যে একটি থাকলেই আপনি মালিক:
১️⃣ বৈধ ট্রান্সফার দলিল – যদি আপনি কোনো মালিকের কাছ থেকে বৈধভাবে সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং সেই দাতার মালিকানার চেইন সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে আপনার কাছে থাকা দলিলই মালিকানা দাবির প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট।
২️⃣ ধারাবাহিক খতিয়ান (CS, SA, RS) – যদি আপনার কাছে ক্রমাগত রেকর্ড খতিয়ান থাকে এবং সম্পত্তিটি কখনো অন্যের কাছে হস্তান্তরিত না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি আদালতের মাধ্যমে মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
3️⃣ আদালতের রায় বা ডিগ্রি – যদি আপনি আদালতের মাধ্যমে জমির মালিকানা প্রমাণ করতে সক্ষম হন এবং রায় আপনার পক্ষে থাকে, তবে সেটি সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
⚖️ ভোগদখল থাকলেই মালিকানা নয়!
প্রচলিত তামাদি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী, ১২ বছরের অধিক সময় দখলে থাকলেও, যদি কোনো বৈধ দলিল বা আদালতের রায় না থাকে, তাহলে সেই দখলদারকে সম্পত্তি ছাড়তে হবে। এমনকি ১০০ বছর দখলে থাকলেও মালিকানা স্বীকৃতি পাওয়া যাবে না যদি বৈধ কাগজপত্র না থাকে।
📌 ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩-এর ৭ ধারায় বলা আছে, চার শ্রেণীর ব্যক্তিকে উচ্ছেদ করা যাবে না—যাদের হালনাগাদ রেকর্ড, উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা, বৈধ দলিল এবং আদালতের রায় আছে। তবে উচ্ছেদ করতে চাইলে আদালতের অনুমতি আবশ্যক।
📢 সতর্কতা ও পরামর্শ:
অনেকেই দখলে থাকার কারণে নিজেকে মালিক ভাবলেও, বাস্তবে কাগজপত্র না থাকলে আইন তাদের সমর্থন করে না। তাই জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে হলে দলিল, খতিয়ান কিংবা আদালতের রায়—এই তিনটির যে কোনো একটির যথাযথ কপি অবশ্যই থাকতে হবে।
🧾 আপনার অধিকার, আপনার দলিল। এখনই যাচাই করুন জমির কাগজপত্র।
আসিফ