ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

এবার যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে মহাসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিলো নৌ শক্তিতে বিশ্বসেরা চীন

প্রকাশিত: ০৮:০০, ৯ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ০৮:১২, ৯ আগস্ট ২০২৫

এবার যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে মহাসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিলো নৌ শক্তিতে বিশ্বসেরা চীন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে চলছে দখলের খেলা। এই খেলায় বরাবরই এগিয়ে বিশ্বের পরাশক্তিরা। মূলত দখলের মাধ্যমে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করে তারা। এই যেমন চীন—দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে দেশটি। কিন্তু সিজিংপিং-এর পরিকল্পনার সামনে সবচেয়ে বড় বাধা যুক্তরাষ্ট্র। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বের বড় এক ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই দক্ষিণ চীন সাগর।

এ অঞ্চলের বাইরেও বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারে সমুদ্রের শক্তি বাড়ানোর বিকল্প নেই। আর তাই উচ্ছাবিলাশী চীন গড়ে তুলেছে এমন এক নৌবাহিনী, যা সমুদ্রে যেকোনো শক্তিকে টেক্কা দিতে সক্ষম। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নৌশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ মনোযোগ দেন সিজিংপিং। এরপর চীন যে গতিতে নিজেদের নৌশক্তি বাড়িয়েছে, তা অবিশ্বাস্য।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর চেয়ে বড় বহর তৈরির লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হয় চীন। আর সে চেষ্টায় খুব দারুণভাবে সফলও হয়েছে দেশটি। চীনা নৌবাহিনীর দ্রুত সম্প্রসারণ এখন যুক্তরাষ্ট্রকে একাধিক ক্ষেত্রে অতিক্রম করতে সক্ষম। জাহাজের সংখ্যা বিবেচনায় চীনের নৌবাহিনী এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকেও হার মানিয়েছে চীন।

বর্তমানে সিজিংপিং-এর হাতে রয়েছে লিওনিং, সান্ডং ও ফুজিয়ান-এর মতো বিমানবাহী রণতরী। চীনের কাছে রয়েছে ৩৫০-র বেশি যুদ্ধজাহাজ। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে ৩০০টি। এর মধ্যে রয়েছে ১,০০০ টনের বেশি ওজনবিশিষ্ট সক্রিয় যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন, যেগুলো মিসাইল বা টরপেডো দিয়ে সজ্জিত। ২০০৩ সালে চীনের ছিল মাত্র ২০টি ডেস্ট্রয়ার; ২০২৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২টিতে। গত দশকে চীন চালু করেছে ২৩টি ডেস্ট্রয়ার, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র করেছে মাত্র ১১টি।

চীনের নৌবাহিনীর অগ্রগতি স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন নৌবাহিনীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন গত দুই দশকে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই তারা বিশ্বের অন্যতম নৌশক্তিতে পরিণত হয়েছে। চীন অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, বিমানবাহী রণতরী, যুদ্ধবিমান, ব্যালিস্টিক নিউক্লিয়ার মিসাইল সাবমেরিন, বিশালাকার কোস্টগার্ডসহ বহু আধুনিকীকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

নিজেদের সামরিক লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নৌঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে চীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিভিন্ন মহাদেশে মোট আটটি নৌঘাঁটি স্থাপন করবে দেশটি। চীনের বাণিজ্যিক শিপইয়ার্ডগুলো যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো শিপইয়ার্ডের তুলনায় অনেক বড় এবং বেশি উৎপাদনক্ষম। তাদের জাহাজ নির্মাণ ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ২৩০ গুণ বেশি। অর্থাৎ যুদ্ধকালীন সময়েও চীন দ্রুত নতুন জাহাজ তৈরি ও পুরনো জাহাজ মেরামত করতে পারবে—যেখানে যুক্তরাষ্ট্র একটি বড় রক্ষণাবেক্ষণ সংকটে রয়েছে।

শেখ ফরিদ

×