ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

এপস্টিন বিতর্কে ট্রাম্পের নীরবতায় ক্ষুব্ধ এলন মাস্ক:‘হাজারো শিশু নির্যাতনের বিচার কোথায়?’

প্রকাশিত: ০০:২১, ১৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:২২, ১৪ জুলাই ২০২৫

এপস্টিন বিতর্কে ট্রাম্পের নীরবতায় ক্ষুব্ধ এলন মাস্ক:‘হাজারো শিশু নির্যাতনের বিচার কোথায়?’

যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত ফিন্যান্সিয়ার জেফরি এপস্টিন সম্পর্কিত মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির ভূমিকা নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ নেওয়াকে ঘিরে শনিবার সরব হয়েছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একাধিক পোস্টে মাস্ক প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের সমালোচনা করেন।

শনিবার রাতে এক্স-এ পোস্ট করা এক বার্তায় মাস্ক ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল বিবৃতির একটি স্ক্রিনশটের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, “এটা সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ পোস্টগুলোর একটি।” এর জবাবে মাস্ক লেখেন, “একদম ঠিক। উনি ছয়বার ‘এপস্টিন’ বললেন, আর একইসঙ্গে সবাইকে বললেন এপস্টিন নিয়ে আর আলোচনা না করতে। এর মানে কী?”

মাস্ক যোগ করেন, “প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফাইলগুলো প্রকাশ করুন।”

মাত্র কয়েক মিনিট পর, আরেকটি পোস্টে মাস্ক এপস্টিন ইস্যুকে ট্রাম্পের ‘অকিলিস হিল’ হিসেবে উল্লেখ করে লিখেছেন, “এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। হাজার হাজার শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে, সরকারের কাছে সেই অপরাধীদের ভিডিও রয়েছে, অথচ তাদের কাউকেই এখনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি—এই কেমন ধরনের ব্যবস্থা?”

এর আগে শনিবারই ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি দীর্ঘ পোস্টে তার আইনমন্ত্রী পাম বন্ডির পক্ষ নিয়ে বলেন, “তাকে তার কাজ করতে দিন—সে দুর্দান্ত কাজ করছে!” তিনি আরও লেখেন, “আমার ‘বয়েজ’ ও ‘গালস’-রা সবাই কেন পাম বন্ডির পেছনে লেগেছে? সে চমৎকার কাজ করছে। আমরা এক দলে আছি, ম্যাগা দলে। এটা সহ্য করা যায় না।”

তবে মাস্কসহ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যেখানে বন্ডি আগে বলেছিলেন তার ডেস্কেই এপস্টিনের তথাকথিত ক্লায়েন্ট তালিকা রয়েছে, সেখানে এখন কেন সেই তালিকা নিয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এক মেমোতে জানিয়েছে, এপস্টিনের কোনো হাই-প্রোফাইল ব্ল্যাকমেইলিং তালিকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এবং ২০১৯ সালে তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাম্পপন্থীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ এবং বন্ডির ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন।

ট্রাম্প এর প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, “এটা সেই ফাইল, যেগুলো ওবামা, হিলারি, কমি, ব্রেনান আর বাইডেন প্রশাসনের অপরাধীরা বানিয়েছে। এরা বিশ্বকে ধোঁকা দিয়েছে ‘রাশিয়া হোক্স’, ৫১ জন তথাকথিত গোয়েন্দা, আর হান্টার বাইডেনের ‘ল্যাপটপ ফ্রম হেল’ দিয়ে। এরা ‘এপস্টিন ফাইল’-ও বানিয়েছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “যদি এই ফাইলে ম্যাগা মুভমেন্টের কোনো ক্ষতি হতো, তাহলে এসব র‍্যাডিক্যাল লেফট পাগলরা তা এতদিনে প্রকাশ করেই ফেলত। কিন্তু তারা এখনো JFK বা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ফাইলও পুরোপুরি ছাড়েনি।”

এদিকে এলন মাস্ক স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই ইস্যুকে আর ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। “আমরা যদি সত্যিই বিশ্বাস করি যে হাজার হাজার শিশু নির্যাতিত হয়েছে, তাহলে অপরাধীদের নাম জানানো এবং বিচার নিশ্চিত করা জরুরি,” বলেন মাস্ক।

ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্ব নতুন কিছু না হলেও, এপস্টিন বিতর্কে মাস্কের এই প্রত্যক্ষ এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া নতুন করে বিতর্কের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন এই ইস্যু তার জন্য রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর হয়ে উঠতে পারে।

 

সূত্র:The Hill

আফরোজা

×