
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকেরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি "বছরের পর বছর পিছিয়ে গেছে"।
বুধবার সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড আলাদা বিবৃতিতে বলেন, “নতুন ও নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য” ইঙ্গিত করে যে ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে এবং সেগুলো পুনরায় নির্মাণে দীর্ঘ সময় লাগবে।
এই মন্তব্য আসে এমন সময়, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (DIA) একটি প্রাথমিক রিপোর্টের সমালোচনা করেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত শনিবার রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার নির্দেশ দেন। এটি ছিল ইসরায়েলের সপ্তাহব্যাপী অভিযানের অংশ হিসেবে আরও এক ধাক্কা।
সিআইএর বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের বিশ্বাসযোগ্য উৎস ও পদ্ধতির মাধ্যমে পাওয়া নতুন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, নাতাঞ্জ, ফোর্ডো ও এসফাহান – এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে।”
জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড এক্স-এ লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা বলছেন, সেটিই সত্য—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তবে এই গোয়েন্দা রিপোর্টগুলোতে পরিষ্কার করে বলা হয়নি ইরান আংশিকভাবে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সরিয়ে নিতে পেরেছিল কি না। DIA-এর এক প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছু পরিমাণ ইউরেনিয়াম হয়তো হামলার আগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প, নেটারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমরা এত দ্রুত ও শক্তিশালীভাবে আঘাত করেছি যে তারা সরাতে পারেনি।”
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সম্ভাব্য আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন।
গোয়েন্দা প্রধানরা DIA রিপোর্টের ফাঁস হওয়ার ঘটনাকেও সমালোচনা করেছেন। রিপোর্টটি ‘নিম্নমাত্রার আত্মবিশ্বাসে’ তৈরি হয়েছিল বলে DIA জানিয়েছে এবং আরও তথ্য পেলে সেটি হালনাগাদ করা হবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, “যদি ফোর্ডো কীভাবে ধ্বংস হয়েছে জানতে চান, তাহলে বড় একটা বেলচা নিয়ে অনেক গভীরে খনন করতে হবে। কারণ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিং হবে, যেখানে “অভিযোগ নয়, প্রমাণ” দেখানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি একেবারেই মাটিতে মিশে গেছে, যা পুনরুদ্ধারে বছর লেগে যাবে—এবং এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
মুমু