ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারানো কিছু মানুষের স্বপ্নের মৃত্যুর গল্প, পূরণ হয়েও অধরা রয়ে গেল তাদের সেই স্বপ্নের যাত্রা!

প্রকাশিত: ১৫:২০, ১৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৫:২১, ১৩ জুন ২০২৫

বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারানো কিছু মানুষের স্বপ্নের মৃত্যুর গল্প, পূরণ হয়েও অধরা রয়ে গেল তাদের সেই স্বপ্নের যাত্রা!

এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ফ্লাইট AI-171 আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, যার ফলে বিমানে থাকা ২৪১ জন যাত্রীর সকলেই নিহত হন। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের বিমানটি আকাশে উঠতে না পেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মেডিকেল কলেজের মেস ভবনে ভেঙে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে আগুনে পুড়ে যায়।

বিমানটি থেকে একমাত্র একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার হন। ঘটনাস্থল থেকে কালো ধোঁয়া আকাশ ছুঁয়ে ওঠে। উদ্ধার কাজে নিয়োজিত দমকল এবং উদ্ধারকারী দল কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় মৃতদেহগুলোর সন্ধান পান।

এটি বোয়িং ৭৮৭-৮ সিরিজের প্রথম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এবং ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সারা দেশ জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রধানমন্ত্রী সহ রাষ্ট্রপতি এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা শোকপ্রকাশ করেছেন।

বিমানে ছিলেন একাধিক হৃদয়বিদারক কাহিনির যাত্রী

ফ্লাইট AI-171-এ থাকা যাত্রীদের পরিচয় প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকবার্তা আর হৃদয়বিদারক গল্প ছড়িয়ে পড়েছে।

রাজস্থানের একটি পরিবার: বাঁসওয়ারা জেলার সফটওয়্যার পেশাজীবী প্রতীক জোশী গত ছয় বছর ধরে লন্ডনে বসবাস করছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করতে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই তারা রওনা দিয়েছিলেন। প্রতীকের স্ত্রী ডা. কোমি ব্যাস, যিনি একজন চিকিৎসক ছিলেন, ফ্লাইটের দু’দিন আগে চাকরি ছেড়েছিলেন।

নববিবাহিতা খুশবু কানওয়ার: রাজস্থানের বালোটরা জেলার আরাবা দুদাওয়াতা গ্রামের খুশবু কানওয়ার সদ্য বিবাহিত ছিলেন। তার স্বামী, লন্ডনপ্রবাসী চিকিৎসক বিপুল সিং রাজপুত, স্ত্রীকে লন্ডনে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় ছিলেন। বাবার সঙ্গে এয়ারপোর্টে এসে বিমানে উঠেছিলেন খুশবু। তাদের একসঙ্গে তোলা শেষ ছবিটিই আজ স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে।

উদয়পুরের ভাইবোন শুভ ও শগুন মোদী: ২৪ ও ২২ বছর বয়সী এই দুই ভাইবোন সফলভাবে এমবিএ শেষ করে পারিবারিক মার্বেল ব্যবসায় যুক্ত হয়েছিলেন। লন্ডনে বন্ধুর সঙ্গে ছুটি কাটাতে যাচ্ছিলেন তারা। তাদের প্রতিবেশী এক্স (সাবেক টুইটার) এ আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, “এরা আমার প্রতিবেশী। ওদের বড় হতে দেখেছি। আজ ওদের পরিবার চরম দুঃখে দিন কাটাচ্ছে। এটি আর কেবল একটি খবর নয়, এটি আমাদের পাশের ঘরের বাস্তবতা।”

স্ত্রীর মৃত্যুর ৭ দিন পর স্বামীর মৃত্যু: লন্ডন প্রবাসী অর্জুন পাতোলিয়া ভারতে এসেছিলেন তার সদ্যপ্রয়াতা স্ত্রী ভরতিবেনের অস্থিভস্ম বিসর্জন দিতে। স্ত্রীর ইচ্ছামত, গুজরাটের আমরেলি জেলার গ্রামে অস্থি বিসর্জনের পর তিনি লন্ডনে দুই ছোট মেয়ের কাছে ফেরার জন্য বিমান ধরেন। কিন্তু সেই ফেরা আর হলো না।

রিফাত

আরো পড়ুন  

×