বিপ্লবের গান শুনতে যাচ্ছেন ট্রাম্প :দেখবেন ’লে মিজারাব্ল ’!

নাটক রাজনীতি ছুঁয়েছে — একদিকে বিপ্লবের গল্প, অন্যদিকে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ।

ওয়াশিংটন ডিসির জন এফ. কেনেডি সেন্টারে আবারো বাজতে যাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত মিউজিক্যাল ‘Les Misérables’-এর সেই পরিচিত গান: “Do You Hear the People Sing?” আর সেই সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প — একজন নেতার মঞ্চে ওঠা, যার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সারা দেশে উত্তাল প্রতিবাদ।

ট্রাম্প বলেছেন, “আমি এই মিউজিক্যাল ভালোবাসি — এর গানগুলো প্রাণবন্ত, গল্পটা দারুণ।”

তবে নাটকের প্রেক্ষাপট আর বাস্তব রাজনীতির সময়কাল যেন আশ্চর্যভাবে এক বিন্দুতে মিলে গেছে। ১৯ শতকের ফ্রান্সের রাজতন্ত্রবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গল্প বলার পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি ও সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ।

প্রথম মঞ্চস্থ হওয়ার পর থেকে ‘Les Misérables’ শুধু বিনোদনের মাধ্যমই নয়, হয়ে উঠেছে গণ-আন্দোলনের অনুপ্রেরণা। হংকংয়ের প্রো-ডেমোক্রেসি আন্দোলন থেকে শুরু করে বহু দেশে এই নাটকের গান হয়েছে প্রতিবাদের প্রতীক।

বিশেষত “Do You Hear the People Sing?” গানটি বিশ্বের নানা জায়গায় এক কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে। এবার সেই গানই বাজবে এমন একজন নেতার সামনে, যিনি নিজেই বিতর্কিত ক্ষমতার ব্যবহার ও দমনমূলক নীতির কারণে সমালোচিত।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটিই ট্রাম্পের প্রথম নাট্য প্রদর্শনীতে সরাসরি অংশগ্রহণ। এর আগে তিনি কখনো কেনেডি সেন্টারের শো-তে যাননি। তবে ২০২৫ সালের শুরুতে তিনি পুরো ট্রাস্টি বোর্ড বরখাস্ত করে নিজেকে বোর্ড চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন—যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বাতিল করা হয় প্রাইড মান্থ উপলক্ষ্যে গে মেনস কোরাসের কনসার্ট। ‘হ্যামিলটন’-এর মতো বিখ্যাত প্রযোজনা সরাসরি সরে দাঁড়ায়, জানিয়ে দেয়, “এই নতুন সংস্কৃতির অংশ হওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”

‘Les Miz’ শো-এর আয়োজকরা জানিয়েছেন, “আমরা কেনেডি সেন্টারের দর্শকদের সামনে আবার এই মহান নাটকটি উপস্থাপন করতে প্রস্তুত। ১৯৮৬ সালে এই মঞ্চেই যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল।”

এই উদ্বোধনী শো একটি ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠান হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে উপস্থিত থাকবেন মেলানিয়া ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কেনেডি সেন্টারের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, “১১ জুন, বুধবার, শুধু টিকিটধারী দর্শকরাই ভেন্যুতে প্রবেশ করতে পারবেন।”

এই নাটক মঞ্চে এলেই যেন প্রশ্ন জাগে—এটা কি কেবল নাটক? নাকি ক্ষমতার সামনে প্রতিবাদের এক নীরব গান? সময় বলবে।