
যৌতুকের দাবি এ দেশে নতুন কিছু নয়। হাতঘড়ি, আসবাব, মোটরবাইক, টাকা কিংবা সোনা—সবই চলে। তবে এবার বিহারে যৌতুকের তালিকায় যুক্ত হলো মানবদেহের অঙ্গ! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, পুত্রবধূর কাছ থেকে কিডনি চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। তরুণী দীপ্তির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর ওপর চাপ দিতে থাকে নানা ধরনের যৌতুক আনার জন্য। কখনও টাকা, কখনও গয়না, এমনকি এক পর্যায়ে স্বামীর জন্য মোটরবাইক চাওয়া হয়। এসব দিতে না পারায়, এবার দাবি ওঠে তাঁর শরীর থেকে একটি কিডনি দেওয়ার!
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীপ্তির সঙ্গে ২০২১ সালে বিয়ে হয় তাঁর স্বামীর। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় যৌতুকের দৌরাত্ম্য। বিয়ের দুই বছর যেতে না যেতেই জানা যায়, দীপ্তির স্বামীর একটি কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। সেই সুযোগেই পরিবার শুরু করে কুৎসিত দাবি "স্বামীর বাঁচার জন্য কিডনি দিতে হবে স্ত্রীকেই!"
তবে দীপ্তি এমন দাবি মানতে রাজি হননি। তখনই শুরু হয় অত্যাচার। মারধর করে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান দীপ্তি। থানায় গিয়ে শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পর দুই পক্ষকে থানায় ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তবে দীপ্তি স্পষ্ট জানান, তিনি এই পরিবারের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখতে চান না এবং বিবাহবিচ্ছেদ চান।
কিন্তু তাঁর স্বামী ডিভোর্স দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ অবস্থায় বিষয়টি আরও জটিল আকার নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মানবদেহের অঙ্গকে যৌতুকের তালিকায় যুক্ত করা শুধু অমানবিকই নয়, এটি ফৌজদারি অপরাধও।
এই ঘটনায় সমাজজুড়ে নেমেছে বিস্ময় ও ক্ষোভ। সামাজিকমাধ্যমেও উঠছে প্রতিবাদের ঝড়।
মিমিয়া