ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০৬, ১১ জুন ২০২৫

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন ইস্যুতে বরাবরই কড়াকড়ির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে তার নেওয়া একের পর এক সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে সমালোচনার তোয়াক্কা না করে তিনি বারবার নিজের কৌশলে অটল থেকেছেন। সাম্প্রতিক পদক্ষেপে যেন অভিবাসন বিরোধিতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প।

ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর, যেটি ‘অভিবাসীবান্ধব রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত, সেখানে তার ‘অভিবাসন হটাও’ নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন সহিংস সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে, যা ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরেও।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ট্রাম্প শহরে প্রাথমিকভাবে ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘোষণা দেন এবং পরবর্তীতে আরও ৭০০ মেরিন সেনা নামানোর নির্দেশ দেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এ ধরনের পদক্ষেপকে “স্বৈরাচারী” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং কড়া সমালোচনা করেছেন।

সোমবার গভর্নর নিউসম জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও ২,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যার ফলে মোট সেনাসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪,০০০–এরও বেশি। সিএনএন জানিয়েছে, এরই মধ্যে ১,৭০০ সেনা সেখানে পৌঁছে গেছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনো রাজ্যের গভর্নরের সম্মতি ছাড়াই এভাবে সেনা মোতায়েন করেছেন।

এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গভর্নর নিউসম ফেডারেল আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ট্রাম্প ফেডারেল সরকারের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন। সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে করা মামলায় ট্রাম্প ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা বিভাগকে বিবাদী করা হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা বলেন, “এই পদক্ষেপ কেবল বেআইনি নয়, বরং এটি রাজ্যের সার্বভৌমত্বকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।” আদালতের কাছে তিনি সেনা মোতায়েনে নিষেধাজ্ঞা জারির অনুরোধ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে অভিবাসীদের ধরপাকড় ও সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও তীব্র হচ্ছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে টানা পাঁচদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে, যা ছড়িয়ে পড়েছে টেক্সাস, বোস্টন, হিউস্টন, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ডালাস ও আটলান্টার মতো শহরেও।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই ৬০০–এর বেশি রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। শুক্রবার প্রথম দিনেই ৪৪ জন অভিবাসী ও ৭৭ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ব্যর্থ ছত্রভঙ্গ অভিযানে ২৯ জন এবং রোববার আরও ২৭ জনকে শহরের কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। একই দিনে সান ফ্রান্সিসকোতে ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এই ঘটনায় স্পষ্ট, অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স নীতি আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে।

পৃথী

×