
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত। অনেক শক্তিশালী বিশ্বনেতাও তার প্রভাব এবং ক্ষমতার সামনে সাবধান থাকেন। অথচ, বিস্ময়কর হলেও সত্য – এই পুতিনই এক নারীকে যমের মতো ভয় পান!
এই নারীর নাম দারিয়া সেরেনকো। তিনি রাশিয়ার পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও যুদ্ধনীতির বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠস্বর। ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পুতিন এখন এই নারীকে নিজের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন। তিনি কোনো সন্ত্রাসী বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নন, বরং একজন নারীবাদী আন্দোলনের নেত্রী।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর, এর ঠিক পরদিনই দারিয়া সেরেনকো গঠন করেন "ফেমিনিস্ট অ্যান্টি-ওয়ার রেজিস্টেন্স" নামের একটি যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন। এই গ্রুপটি রাশিয়ার ৮০টিরও বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে হাজার হাজার নারী যুক্ত হয়েছেন। তারা যুদ্ধবিরোধী চিঠি, পোস্টকার্ড ও প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে পুতিনের যুদ্ধনীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
এই নারীবাদী সংগঠনের উদ্যোগে শত শত যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউক্রেনের নারীদের যুদ্ধের দুর্ভোগের চিঠি ও বার্তা রুশ নাগরিকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে পুতিনের শাসনব্যবস্থা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
সেরেনকো বর্তমানে নির্বাসনে থাকলেও পুতিন তাকে থামাতে নানা ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তার লেখা ৪৮টি বই সেন্ট পিটার্সবার্গের বইয়ের দোকান থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে তাকে "বিদেশি এজেন্ট" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তার সংগঠনকে "অপ্রিয় সংগঠন" ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করে সেরেনকোর বিরুদ্ধে ছয় বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে।
পশ্চিমে হয়তো এখনো তিনি বেশি পরিচিত নন, কিন্তু রাশিয়ায় দারিয়া সেরেনকো এখন পুতিনের অন্যতম মাথাব্যথার নাম। তার নেতৃত্বে রাশিয়ার পুরুষতান্ত্রিক ও দমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে নারীরা যেভাবে মুখ খুলেছে, তাতে বোঝাই যায় – কেন তাকে যমের মতো ভয় পান পুতিন।
এম.কে.