ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কানাডার নাগরিকত্ব আইনে বড় পরিবর্তন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫১, ৮ জুন ২০২৫

কানাডার নাগরিকত্ব আইনে বড় পরিবর্তন

ছবি: সংগৃহীত

বিদেশে জন্ম নিলেও এখন কানাডার নাগরিকত্ব পেতে পারবে দ্বিতীয় প্রজন্ম—এমনই একটি যুগান্তকারী বিল পাস করতে যাচ্ছে কানাডা সরকার। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে উত্থাপিত হয়েছে Bill C-3, যা নাগরিকত্ব লাভের সীমা প্রথম প্রজন্ম থেকে সরিয়ে পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত বিস্তৃত করতে যাচ্ছে।

২০০৯ সালে চালু হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, শুধুমাত্র প্রথম প্রজন্মের বিদেশে জন্ম নেয়া কানাডিয়ানরা তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব দিতে পারতেন। অর্থাৎ, কোনো কানাডিয়ান নাগরিক যদি বিদেশে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার সন্তানও বিদেশে জন্মায়, তাহলে সে সন্তান নাগরিকত্বের আওতার বাইরে পড়ে যেত।

এই আইনের ফলে হাজারো পরিবার নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, যা বর্তমানে অসময়োপযোগী এবং বৈষম্যমূলক বলে মনে করছে কানাডা সরকার।

নতুন বিলটি দুটি মূল পরিবর্তন আনতে চায়—

যারা কেবল প্রথম প্রজন্ম সীমার কারণে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, তাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

দ্বিতীয় প্রজন্মের নাগরিকত্বের সুযোগ তৈরি হবে, যদি প্রমাণ করা যায় যে শিশুর কানাডিয়ান পিতা-মাতা জন্মের আগ পর্যন্ত কানাডায় কমপক্ষে ১,০৯৫ দিন (তিন বছর) বসবাস করেছেন।

এই নিয়মে একটি “সাবস্ট্যানশিয়াল কানেকশন” বা বাস্তব কানাডিয়ান সম্পর্কের নিশ্চয়তা রাখা হয়েছে, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কানাডিয়ান পরিবারগুলোর প্রতি সুবিচার করা যায়।


এই বিলটি কার্যকর হলে উপকৃত হবেন:

  • বিদেশে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ানদের বিদেশে জন্ম নেওয়া সন্তানরা
  • বিদেশে দত্তক নেওয়া শিশুরা
  • সেকশন ৮ অনুযায়ী যারা ২৮ বছর বয়সে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন
  • “লস্ট কানাডিয়ানস” নামে পরিচিত সেই সব নাগরিক যারা পুরোনো আইন অনুযায়ী নাগরিকত্ব হারিয়েছিলেন

২০০৯ ও ২০১৫ সালের সংশোধনের ফলে প্রায় ২০,০০০ জন পুনরায় নাগরিকত্ব পান। Bill C-3 সেই ধারাবাহিকতা আরও এগিয়ে নিতে চায়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট এক রায়ে জানায়, বর্তমান প্রথম-প্রজন্ম সীমা অসাংবিধানিক, কারণ এটি বিদেশে জন্ম নেয়া শিশুদের প্রতি বৈষম্যমূলক। আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল না করে, সরকার স্বেচ্ছায় আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।

Bill C-3 এখনো চূড়ান্তভাবে আইনে পরিণত হয়নি। এটি কানাডার দুই কক্ষে পাস হয়ে রয়্যাল অ্যাসেন্ট পেলে তবেই কার্যকর হবে। এরপর কানাডার ইমিগ্রেশন, রিফিউজি ও সিটিজেনশিপ (IRCC) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রকাশ করা হবে।

ইমিগ্রেশন মন্ত্রী লেনা মেটলেজ ডিয়াব বলেন, “কানাডিয়ান হওয়া শুধু জন্মস্থানের ওপর নির্ভর করে না। এটি একটি পরিচয়, একটি মূল্যবোধ ও বৈচিত্র্যের প্রতি অঙ্গীকার।”

মুমু ২

×