ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশ, সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২১ মে ২০২৫

গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশ, সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি: সংগৃহীত।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, ইয়ামেন, লেবানন ও ইরানকে ঘিরে চরম উত্তেজনার মধ্যে সিরিয়ায় নতুন করে পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০ মে এমনই বিস্ফোরক সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

তিনি বলেন, “সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পতনের মুখে পড়তে পারে। দেশটি চরম বিভক্তির পথে হাঁটছে।”

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের হাতে দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে এবং আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর থেকে আহমেদ আল সারার নেতৃত্বে একটি ইসলামপন্থী সরকার গঠিত হলেও স্থিতিশীলতা ফেরেনি।

২০২৫ সালের মার্চে আসাদপন্থীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় প্রায় ৯০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন আলাওই সম্প্রদায়ের। মে মাসের শুরুতে দামেস্ক ও সুইয়েদা প্রদেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে আরও শতাধিক মানুষ নিহত হয়।

এই পরিস্থিতিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সিরিয়ার উপর থেকে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

গত সপ্তাহে সৌদি আরবের রিয়াদে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট সারার সঙ্গে তার একটি ঐতিহাসিক বৈঠক হয়। এতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাম্প বলেন, “সারা একজন তরুণ, আকর্ষণীয় ও শক্তিশালী নেতা। তার নেতৃত্বে সিরিয়া পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”

তবে মার্কো রুবিও এই আশাবাদের বিপরীতে কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সিরিয়ার সরকার এখনো গভীর সংকটে। যদি আন্তর্জাতিক মিত্ররা সহায়তায় এগিয়ে না আসে, তাহলে এই সরকার ব্যর্থ হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।”

তিনি আরও জানান, দেশটি এখনো ধর্মীয়, জাতিগত বিভাজন এবং সহিংসতার ঘূর্ণাবর্তে রয়েছে।

রুবিওর বিবৃতির পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও সিরিয়ার উপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস জানান, “সিরিয়াকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ইউরোপ পাশে থাকবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, নতুন নেতৃত্ব, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা—এই তিনটি বিষয় একত্রিত হলে সিরিয়া পুনর্গঠনের পথে অগ্রসর হতে পারে। তবে সিরিয়ার অতীত, অব্যাহত সহিংসতা ও গোষ্ঠীগত বিভাজনই এখন পর্যন্ত দেশটির প্রধান চ্যালেঞ্জ।

নুসরাত

×