ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

যুদ্ধে লড়ছে ভারত-পাকিস্তান, লাভ হচ্ছে চীনের!

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ১০ মে ২০২৫

যুদ্ধে লড়ছে ভারত-পাকিস্তান, লাভ হচ্ছে চীনের!

ছবিঃ সংগৃহীত

কাশ্মীরকে ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের পুরনো বৈরিতা নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যে, চীন যেন এক নীরব দর্শক হয়েও অনেক কিছু দেখছে, শিখছে—এবং গোপনে অনেক কিছু সংগ্রহ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি চীনের জন্য এক অনন্য সুযোগ, কারণ দুই প্রতিবেশী দেশের সংঘর্ষ থেকে চীন সরাসরি গোয়েন্দা তথ্য আহরণ করতে পারছে, বিশেষত ভারত সম্পর্কে—যাকে তারা ভবিষ্যতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে।

চীনের নজর এখন আকাশে, সাগরে এবং উপগ্রহে। তাদের শত শত স্যাটেলাইট আকাশ থেকে নজরদারি করছে। সীমান্ত ঘেঁষে বসানো সামরিক ঘাঁটি, ভারত মহাসাগরে ভেসে থাকা তাদের তথাকথিত মাছ ধরার জাহাজ—সবই যেন এক অদৃশ্য জালের মতো কাজ করছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে, আর তা দিয়ে তারা দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কর্মকর্তা। যদিও ভারত এ ধরনের কোনো ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি। এমনকি এই সংঘর্ষে রাফালের মতো অত্যাধুনিক বিমান জড়িত ছিল বলে জানা যাচ্ছে, যা বিশ্বের বহু দেশের জন্যও আগ্রহের বিষয়।

এই সংঘাত শুধু সামরিক বাহিনীর নয়, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্যও এক পরীক্ষা ক্ষেত্র। কার বিমান কতটা কার্যকর, কোন মিসাইল কেমন কাজ করল, প্রতিক্রিয়া কত দ্রুত এসেছিল—এসব তথ্য ভবিষ্যতের জন্য সোনা ফলের মতো।

চীন এই পরিস্থিতি শুধু মনোযোগ দিয়ে দেখছে না, বরং গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছে। লন্ডনের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, চীনের কাছে এখন অন্তত ২৬৭টি উপগ্রহ রয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই সামরিক নজরদারি ও সিগন্যাল সংগ্রহে ব্যস্ত। ভারতের মতো দেশ এসব প্রযুক্তির দিক দিয়ে এখনো অনেকটা পিছিয়ে।

সমুদ্রেও পিছিয়ে নেই চীন। ভারত মহাসাগরে তাদের মাছ ধরার জাহাজের আড়ালে ছদ্মবেশে কাজ করছে সামরিক গোয়েন্দা দল। সম্প্রতি ২২৪টি চীনা জাহাজ একসঙ্গে ভারতীয় নৌ-মহড়ার কাছাকাছি অবস্থান করে, যা অনেকের চোখে পড়েছে। এই জাহাজগুলো কেবল মাছ ধরতেই আসে না, বরং সাগরের নিচের শব্দ শোনে, বার্তা ধরে রাখে এবং তথ্য পাঠিয়ে দেয় নিজ দেশে।

চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অনেক গভীর। বহু বছর ধরেই পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে, প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তাই, যখন পাকিস্তান কোনো বড় সামরিক সিদ্ধান্ত নেয়, চীনের কর্মকর্তারা সেটার কিছু না কিছু নিশ্চয়ই জানেন।

ভারতের পক্ষ থেকে যদিও বলা হয়েছে তারা চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, তবে বাস্তবতা হচ্ছে—এই বন্ধুত্ব এখন চীনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সুবিধায় পরিণত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধ বা সংঘর্ষ কোনো দেশের জন্য কাম্য নয়। কিন্তু যখন এমন কিছু ঘটে, তখন কেউ কেউ সেটাকে সুযোগ হিসেবে দেখে। চীন ঠিক সেই কাজটাই করছে—নীরবে, গভীরভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে।


 

মারিয়া

×