
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে তারা বড় জয় পেয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলের মানুষ এখন আর তাকে আগের মতো বিশ্বাস করেন না।
মারিভ পত্রিকার নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ শতাংশ ইসরায়েলি চান গাজার যুদ্ধ এখনই বন্ধ হোক এবং জিম্মিদের মুক্ত করা হোক।
এর আগে মার্চ মাসে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হচ্ছিল। সেই চুক্তির মাধ্যমে অনেক ইসরায়েলি জিম্মি মুক্ত হয়, আর বিনিময়ে ইসরায়েল অনেক ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেয়। পরের ধাপে আরও জিম্মি মুক্ত হওয়ার কথা ছিল এবং গাজা থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু নেতানিয়াহু হঠাৎ করে যুদ্ধবিরতি বন্ধ করে আবার গাজায় হামলার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।”
অনেক ইসরায়েলি, বিশেষ করে জিম্মি পরিবারের লোকজন এতে খুব কষ্ট পান। তারা মনে করেন, নেতানিয়াহু নিজের রাজনীতি বাঁচাতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফলে তার জনপ্রিয়তা কমে যায়। তার সরকার এখন কট্টর ডানপন্থী ও ধর্মীয় দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে।
এরপর নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে ‘বড় সাফল্য’ দাবি করেন। তিনি বলছেন, তিনি আগাম নির্বাচন দিতে পারেন।
কিন্তু জরিপ বলছে, এই যুদ্ধের কারণে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা খুব একটা বাড়েনি। তার দল লিকুদ পার্টি একা সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
জরিপে আরও বলা হয়েছে, ৪৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নেতানিয়াহু নিজের স্বার্থে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের এক গবেষক বলেন, “নেতানিয়াহু অনেক চতুর রাজনীতিবিদ, কিন্তু এখন অনেক মানুষ তাকে আর বিশ্বাস করেন না।”
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলছে। তিনি ঘুষ, প্রতারণার মতো অভিযোগে অভিযুক্ত। আগামী সপ্তাহে তাকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে হবে। তিনি আদালতের তারিখ পেছাতে চাইলেও সেটা মঞ্জুর হয়নি।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নেতানিয়াহুর বিচার বন্ধ করে দেওয়া উচিত, অথবা তাকে ক্ষমা দেওয়া উচিত। কিন্তু ইসরায়েলের অনেক মানুষ এই মন্তব্যকে ভালোভাবে নেননি।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ায়ার লাপিদ বলেছেন, “ট্রাম্পের এই কথা আমাদের বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের মতো।”
অনেকে মনে করেন, যুদ্ধ চলাকালীন বা জিম্মিরা বন্দি থাকলে আগাম নির্বাচন দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নেতানিয়াহু অনেকবারই সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তাই তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না।
সূত্র: বিবিসি
এম.কে.