
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার আক্রমণে আজ ভোর থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরার স্বাস্থ্য সূত্র। এদিকে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যৎসামান্য যে মানবিক ত্রাণ পৌঁছেছে, তা চরম খাদ্যসঙ্কটে থাকা মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ‘একেবারেই অপর্যাপ্ত’ — এমনটাই জানাল জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের প্রধান মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “অবশেষে কিছু ত্রাণ প্রবেশ করলেও তা এই ভয়াবহ সংকটে পর্যাপ্ত নয়। মানুষ না খেয়ে দিন পার করছে, হাসপাতালগুলো অকার্যকর, এবং শিশুরা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।”
এদিকে পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যাওয়া বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী ‘সতর্কতামূলক গুলি’ চালানোর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে একাধিক রাষ্ট্র।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৩,৬৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২১,৯৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজা সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা বহু মানুষের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৬১,৭০০-এর বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০-এর বেশি মানুষ বন্দি হন।
এ অবস্থায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি, নিরাপদ ত্রাণ সরবরাহ এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষের উদ্ধার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন এখন আর শুধুমাত্র হামাসবিরোধী অভিযান নয়, বরং এটি মানবিক বিপর্যয়ের এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে — যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় ও কার্যকর হস্তক্ষেপ ছাড়া বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এসএফ