
ছবি: সংগৃহীত
লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের হামলার ভয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সামরিক কৌশল পাল্টাতে গিয়ে পানিতে পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। ঘটনায় দেশটির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা।
২৮ এপ্রিল লোহিত সাগরে মোতায়েন থাকা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারিয়ার ট্রুম্যান থেকে সমুদ্রে পড়ে যায় একটি এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান। যুদ্ধবিমানটি রণতরীর হ্যাঙ্গার ডেক থেকে একটি টোইং ট্রাক্টরের মাধ্যমে সরানো হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎই যুদ্ধজাহাজটি কৌশল পরিবর্তন করায় ট্র্যাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যুদ্ধবিমানটি সাগরে তলিয়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় একজন নাবিক আহত হন, তবে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানান, ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এড়াতে আকস্মিকভাবে রণতরীটির দিক পরিবর্তন করা হয়েছিল। এ কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর আগে হুতিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত 'অপারেশন রাফ রাইডা' অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র হারিয়েছে একাধিক এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন। প্রতিটি ড্রোনের মূল্য ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার। শুধু ২০২৫ সালের ১৫ মার্চের পর থেকে অন্তত সাতটি রিপার ড্রোন ডুবে গেছে লোহিত সাগরে।
বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরে যা চলছে তা শুধু সামরিক সংঘর্ষ নয়, বরং একটি গভীর ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের প্রতিহত করতে ব্যাপক সামরিক শক্তি ব্যবহার করছে, যার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক শক্তিচালিত রণতরী ও স্টেলথ বোমার। ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে ছয়টি বি-২ স্টেলথ বোমার, যেগুলো যে কোনো সময় ইরানে হামলা চালাতে সক্ষম।
হুতিদের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নজরে রয়েছে ইরানও, যারা বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহায়তা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সংঘাতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, যার বোঝা এসে পড়ছে মার্কিন করদাতাদের ওপর। যুদ্ধবিমান ও ড্রোন হারানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের আর্থিক খরচ ইতোমধ্যেই দাঁড়িয়েছে শত শত কোটি টাকায়।
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=oQRkug1go2o
এম.কে.