ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় থামছে না মাদক চোরাচালান

হীরা আহমেদ জাকির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ১ মে ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় থামছে না মাদক চোরাচালান

ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার বাতাসে মাদকের বিষাক্ত গন্ধ, রাতের আঁধারে ভারত থেকে কাঁটাতারের উপর দিয়ে আসে অবৈধ মাদক, সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায়ই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, যৌথবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট অভিযান চালাচ্ছে। এতে মাদকদ্রব্যসহ মাদকসেবী ও মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করা হলেও থামছে না মাদক চোরাচালান ও সেবন।

অনেক জায়গায় স্কোপ সিরাপ, গাঁজা, ফেনসিডিল, মদ, ইয়াবা, বিয়ার, দেশি-বিদেশি মদ বিক্রি হচ্ছে, তবে বহন সুবিধাজনক হওয়ায় ইয়াবার বেচাকেনা সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি গ্রামে চলছে নীরবে ইয়াবা সেবন। সেবনকারীদের অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ।

জনমনে প্রশ্ন যৌথবাহিনী, ডিবি, র‍্যাব, পুলিশ এমনকি বিজিবির কড়া নজরদারিতেও কাজ হচ্ছে না। করণীয় কী, কেনোই বা থামানো যাচ্ছে না অবৈধ মাদকদ্রব্য চোরাচালান ও সেবন?

শুধু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ, ডিবি, বিজিবি, র‍্যাব এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেফতার করা হয়েছে ২৪৭ জন এবং রুজু করা হয়েছে ২১৬টি মামলা।

এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯ উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানে রেকর্ড হয়েছে ৩৭৬টি মামলা। এসব মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৪২৫ জনকে।

মাদক মামলার দিক থেকে জেলার কসবা থানা রয়েছে শীর্ষে। সেখানে রেকর্ড হয়েছে ৬৯টি মামলা। এরপরই রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে ৫৯টি, আখাউড়ায় ৫৫টি, বিজয়নগরে ৫৪টি, আশুগঞ্জে ৫২টি, নবীনগরে ৪৫টি, সরাইলে ১৬টি, বাঞ্ছারামপুরে ১৪টি এবং নাসিরনগর উপজেলায় ১৩টি মামলা। যেসব মাদক কারবারিকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে, তারা জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসছে।

মাদকের থাবায় নষ্ট হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম, বাড়ছে ছিনতাই। মাদক কারবারিদের টার্গেট অসহায় পরিবারের সহজ সরল মানুষ, তাদের লোভে প্রায়ই মাদকসহ নারী-পুরুষ মাদক পাচার করতে যেয়ে আইন শৃঙ্খলা সদস্যের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে, বেচে যাচ্ছে আড়ালে থাকা মাদক কারবারিরা।

জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা আখাউড়া, কসবা ও বিজয়নগরে মাদক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে না এসে বরং আরও বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, মাদক চোরাচালানে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন নতুন কৌশল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এভাবে যদি মাদক মামলা অব্যাহত থাকে, তাহলে অন্যান্য সাধারণ মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে মাদক ও চোরাচালান পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও জানান, মাদক মামলার আসামিদের অধিকাংশই গ্রেফতারের ৪-৫ দিনের মধ্যেই জামিনে মুক্তি পাচ্ছে। এতে করে তারা সহজেই আবার মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।

পুলিশ সুপার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা ছাড়া মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়।’

 

হীরা আহমেদ জাকির/রাকিব

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার