
দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা চরমে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রাণহানি ঘটছে প্রতিদিন। এমন এক সংকটময় মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করল বিশ্বের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক জোট জি–৭। শুক্রবার(৯ মে,২০২৫) এক বিবৃতিতে তারা ভারত ও পাকিস্তানকে সরাসরি সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে সংঘাত এড়াতে "গঠনমূলক সংলাপ" শুরু করতে চাইলে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
সম্প্রতি কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত বুধবার ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে, যাতে বহু প্রাণহানি ঘটেছে।এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বের সঙ্গে। শুক্রবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও সরাসরি জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ সংঘাত এড়াতে সংলাপ শুরু করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত আছে গঠনমূলক সহায়তা দিতে।
এপ্রিলে শেষ দিক থেকে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গেও একাধিকবার কথা বলেছেন।এই সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলমান উত্তেজনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেন। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স স্পষ্ট করে বলেন, দুই দেশের যুদ্ধ হলে সেটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় নয়।’
তবে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারত এখন পশ্চিমা বিশ্বের কাছে চীনের প্রভাব মোকাবিলার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার। অপরদিকে, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হলেও আফগানিস্তান থেকে ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তাদের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব কিছুটা কমে গেছে।
জি–৭ সদস্য কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে ইসলামপন্থী জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।” ওই হামলার দায়ভার ভারত পাকিস্তানের ওপর চাপালেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাই এবং দুই দেশকে সরাসরি সংলাপে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে উৎসাহিত করি।”
উল্লেখ্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করলেও আংশিক নিয়ন্ত্রণ করে ভারত ও পাকিস্তান। অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ, বিদ্রোহ এবং কূটনৈতিক টানাপড়েনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে।
এদিকে, পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ বর্তমানে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
সূত্র:রয়টার্স
আফরোজা