
ছবি: সংগৃহীত
হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময় শরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দেয়। এসব লক্ষণ শুরুতে হালকা মনে হলেও সময়মতো চিকিৎসা না নিলে তা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তাই হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞরা বারবার বলে থাকেন—হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে অবহেলা নয়, বরং সতর্কতার সঙ্গে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
নিচে হার্ট অ্যাটাকের কয়েকটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যেগুলো কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়:
১. বুকের মাঝখানে চেপে ধরা বা চাপ অনুভব
এটি হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ ও ক্লাসিক লক্ষণ। অনেক সময় মনে হয় বুকের ওপর ভারী কিছু বসে আছে বা বুক টাইট হয়ে আসছে। ২-৫ মিনিট ধরে এ অনুভূতি থাকলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
২. হাত, কাঁধ, গলা বা চোয়ালে ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়া
বুকের ব্যথা থেকে কাঁধ, বাম হাত, পিঠ বা চোয়ালের দিকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া হার্ট অ্যাটাকের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। বিশেষ করে বাম হাত ভারী বা অবশ লাগলে অবহেলা নয়।
৩. হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়া
সাধারণ হাঁটা বা অল্প কাজেও যদি হঠাৎ শ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসছে, তাহলে তা হৃদ্রোগের লক্ষণ হতে পারে।
৪. ঘাম হওয়া বা মাথা ঘোরা
শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে অথচ কোনো পরিশ্রম করেননি, এমন ঘটনা হলে সেটি অস্বাভাবিক এবং তা হৃদ্রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। মাথা হালকা হয়ে যাওয়া বা অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম হলে আরও সতর্ক হওয়া দরকার।
৫. বমি ভাব বা পেট খারাপ
কোনো কারণ ছাড়া বমি বমি ভাব, হজমে সমস্যা বা পেটে অস্বস্তি থাকলেও তা হার্ট অ্যাটাকের অপ্রচলিত লক্ষণ হতে পারে, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে।
৬. অস্থিরতা বা মৃত্যুভয়
হার্ট অ্যাটাকের আগে অনেকে হঠাৎ আতঙ্কিত বোধ করেন, যেন কিছু একটা খারাপ হতে যাচ্ছে। অকারণ উদ্বেগ, অস্থিরতা বা আতঙ্কের অনুভূতি থাকলেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
উল্লিখিত যেকোনো একটি লক্ষণ একাধিকবার ঘটলে বা একাধিক লক্ষণ একসঙ্গে দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। অনেক সময় মনে হয় এটি গ্যাস্ট্রিক বা ক্লান্তির কারণে হচ্ছে—এ ভুল ধারণা মারাত্মক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়:
নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা
ধূমপান ও অতিরিক্ত তেল-চর্বি এড়িয়ে চলা
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
দৈনন্দিন হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম
মানসিক চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত ঘুম
সতর্ক থাকুন, হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করুন। আপনার একটি সচেতনতা বাঁচাতে পারে একটি প্রাণ। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আরও নির্দিষ্ট পরামর্শ চাইলে, আপনার বয়স, শারীরিক অবস্থা বা উপসর্গ জানিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন।
ফারুক