
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে একই দিনে এক প্রবাসীর স্ত্রী, ২ সন্তান ও ২ নিকটাত্মীয়সহ ৫ জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের শ্রীফলগাতি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন তাঁরা। শুক্রবার (২৭ জুন) এ ঘটনায় আলাদা ২টি অভিযোগ দায়ের করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রোববার রাত ৮টা) কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন, রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের শ্রীফলগাতি গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফরিদুল ইসলামের স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০), তাঁর দুই ছেলে সোহান মিয়া (১২) ও শাহরিয়ার শুভ (৬)। এ ছাড়া একই দিন শারমিনের ননদের মেয়ে আমিনা খাতুন (২০) ও তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ (৫) নিখোঁজ হন।
রোববার বিকালে শ্রীফলগাতি গ্রামের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসী ফরিদুলের ঘরে তালা ঝুলছে। প্রায় ৪০ গজ দূরেই আমিনার বাবার বাড়ি। গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তের নারী-পুরুষরা আসছেন ঘটনার বিস্তারিত জানতে।
এ সময় প্রবাসী ফরিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই মোকছেদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বাইটকামারী মজলিশের (কুলখানির) দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে প্রবাসী ফরিদুলের স্ত্রী শারমিন তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। পরে তাঁরা ওই দাওয়াতের বাড়িতে যাননি বলে জানতে পারেন। পরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় নিখোঁজ শারমিনের শ্বশুর আব্দুল গফুর ও আমিনার মা ছমিরন বেগম বাদী হয়ে থানায় আলাদা লিখিত অভিযোগ দেন।
একমাত্র মেয়ে ও নাতির সন্ধান না পাওয়ায় বাকরুদ্ধ আমিনার মা ছমিরন বেগম। ছমিরন বলেন, বৃহস্পতিবার তাঁর মেয়ে স্বামীর বাড়ি কোদালকাটিতে যাবে বলে জানান। পরে কর্তিমারী বাজারে গিয়ে একটি অটোভ্যানে তুলে দিয়ে আসেন। ঘণ্টা দু’এক পরে খোঁজ নিয়ে দেখেন সে স্বামীর বাড়িতে যায়নি।
তিনি আরও জানান, ওই দিন একই সময়ে আমিনার মামী শারমিনও উপজেলার বাইটকামারীতে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তাঁরা ওই দাওয়াতে যাননি।ঘটনার পর থেকে শারমিনের ব্যবহৃত ফোন নম্বর বন্ধ রয়েছে।এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
প্রতিবেশীদের ভাষ্য, তাঁরা (শারমিন-আমিনা) সম্পর্কে মামী-ভাগ্নী হলেও দু’জনের চলাফেরা ছিলো চোখে পড়ার মতো। বেশির ভাগ সময় শারমিনের থাকার ঘরেই আড্ডা দিতেন আমিনা, কথা বলতেন ফোনে। আমিনা বেগম প্রতি মাসের বেশির ভাগ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এই সময়ে মামীর সাথেই সময় কাটাতেন তিনি।
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শনিবার বিষয়টি তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্বামীর সাথে ঝগড়ার জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের এই কর্মকর্তার।
আফরোজা