ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

করোনায় আক্রান্ত আরও ২৮ জন, হাসপাতালে ভর্তি ২১২ ডেঙ্গু রোগী

জনকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩:২২, ১৮ জুন ২০২৫

করোনায় আক্রান্ত আরও ২৮ জন, হাসপাতালে ভর্তি ২১২ ডেঙ্গু রোগী

২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে

২৪ ঘণ্টায় ৩০৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১২ জন  ডেঙ্গু রোগী। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। এই সময়ের মধ্যে কেউ মারা যায়নি বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২১২ জনের মধ্যে ১১০ জনই বরিশাল বিভাগের সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৬৭৮ জন। এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন, খুলনা বিভাগ ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছেন।
অপরদিকে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু ২৯ হাজার ৫০৬ জন। এর মধ্যে এই বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এছাড়া ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯০১ জন, এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত ৩৫৯ জন। এদিন প্রতি ১০০ নমুনায় শনাক্তের হার ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৩৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৭৬১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। যার মধ্যে ঢাকায় ১৯৭ জন, বাকি ৫৬৪ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বরিশাল বিভাগ ছাড়াও চট্টগ্রামে (সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে) ১৬ জন, ঢাকায় (সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে) ২৩ জন, খুলনায় (সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে) ১২ জন, ময়মনসিংহ (সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে) একজন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন রোগী পাওয়া গেছে।   
তথ্য বলছে, এই বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন , ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন, মে মাসে তিন জন এবং জুনে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৭ জন।
ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকার দুই সিটির ১৩ ওয়ার্ড ॥ রাজধানীতে মৌসুম শুরুর আগেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রভাব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার দুই সিটির ১৩টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাগুলোতে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদ-ের থেকেও বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার আওতাধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে চালানো প্রাক-বর্ষা জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে-২০২৫-এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো- ১২, ২, ৮, ৩৪, ১৩, ২২ নং ওয়ার্ড। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো- ৩১, ৪১, ৩, ৪৬, ৪৭, ৪, ২৩ নং ওয়ার্ড। দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর অর্থ হচ্ছে, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ১২ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে এডিস মশার ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।  এরপরের অবস্থানে রয়েছে ২, ৮ এবং ৩৪ নং ওয়ার্ড। এগুলোতে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া ১৩ এবং ২২ নং ওয়ার্ডে ২০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।
এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত। সাধারণত এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি ‘ব্রুটো ইনডেক্স’র মানদ-ে লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হওয়া মানেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। 
ব্রুটো ইনডেক্সে যদি লার্ভার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হয়, তাহলে তা ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ সংকেত দেয়। ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে এই মান ছাড়িয়ে গেছে, যার অর্থ ওই এলাকায় প্রতি ১০০টি পানির পাত্রে ২০টির বেশিতে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।

×