
চাঁদপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের পরিত্যক্ত ট্রেন নাইটিং কক্ষে চলছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা (আরএনবি) অফিসের কার্যক্রম। যেখানে ছুপড়ি ঘরের মতো কক্ষটিতে আরএনবি চাঁদপুর ইউনিটে কর্মরত সদস্যরা বসে বসে এক প্রকারের মশা মাছিই যেনো তাড়াতে বেশি সময় পার করছেন।
১৮ জুন বুধবার শহরের বড়ষ্টেশন এলাকায় বহু পুরাতন ও জরাজীর্ণ কক্ষটিতে টিনের চালা দিয়ে বৃষ্টির পানি ভিতরে পড়ে অফিসের সরকারি মূল্যবান কাগজ পত্রাদি নষ্ট হতে সরজমিনে দেখা গেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ, যাত্রীগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি কর্মরত আছে। এ জেলা চাঁদপুর হতে বর্তমানে আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন দু'টি চট্টগ্রামে আসা যাওয়া করছে। আর এগুলোতেই যাতে নিরাপদে যাত্রীসেবা নিশ্চিত হয় সে বিষয়গুলোই তদারকি করছে আরএনবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জানান, চাঁদপুরে আরএনবি সদস্যের কেউ কেউ রেলওয়ে টিকেট কালোবাজারি, বড়ষ্টেশনের ভ্রাম্যমাণ দোকান হতে উৎকোচ গ্রহণসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার তথ্য প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। তবে এগুলো আদৌ কতটা সত্য সেটা তদন্তকারী সংশ্লিষ্টরাই ভালো বলতে পারবে। আমরা চাই আরএনবি সদস্যদের কাজে আরো গতি ফিরুক।
তথ্য মতে, চাঁদপুরে আরএনবি কার্যালয় পরিচালিত হচ্ছে একজন এএসআই এর দায়িত্বে। যদিও এখানে ২০ জন সদস্য থাকার কথা হলেও লোকবল রয়েছে মাত্র ৮ জন। এরমধ্যে এএসআই ১ জন,
হাবিলদার ১ জন এবং সিপাহী রয়েছে ৬ জন। তাই ঘার্তি পূরণে ঈদসহ বিশেষ সময়ে চাহিদানুযায়ী আনসার সদস্য এনে ভ্রাম্যমাণভাবে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করানো হয়।
আরএনবি চাঁদপুরের হাবিলদার ইমাম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা একটা জড়াজীর্ণ ভূতুড়ে পরিবেশে এখানে ৮ জন দায়িত্ব পালন করছি। বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে অনেক সময় স্টেশন মাস্টার অফিসে আরএনবি চাঁদপুরের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে আরএনবি চাঁদপুরের দায়িত্বে থাকা এএসআই শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লার ছেলে। এখানে দায়িত্বে আসার পর পরই রেলওয়েতে চুরি প্রতিরোধ, মামলা দেয়া, টিকেট কালোবাজারি রোধে কাজ, ছাদ ও ইঞ্জিনে যাতে কেউ না বসে, পাথর নিক্ষেপ না করে সেসব বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। বড়ষ্টেশনে ভ্রাম্যমাণ ২/৩শ’ দোকান হতে কে বা কারা ২০/৩০ টাকা করে উৎকোচ নেয় তার প্রমাণে আরএনবি’র কেউ জড়িত প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, দায়িত্ব যখন যেখানে যেকোন অবস্থাতেই পালন করতে সমস্যা নেই। তবে দাপ্তরিক কাজেরও একটা সুন্দর পরিবেশ থাকলে মানসিকভাবে ভালো লাগে। এখন যেখানে রয়েছি তাতে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়ে জরুরী কাগজপত্রসহ সব নষ্ট হয়ে যায়। তাই স্টেশন বা প্লাটফরম সংলগ্ন এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে আরএনবি অফিস ও সকল সুবিধাদিসহ মান সম্মত অন্তত ১৫ জন আরএনবি সদস্যের বসবাস উপযোগী নতুন অফিস ও ব্যারাক নির্মাণে উর্দ্ধতনরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে রেল সম্পদ রক্ষা ও নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে আরএনবি’র পূর্বাঞ্চলের চীফ কমান্ড্যান্ট মোঃ আশরাফুল ইসলামকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, আমি আরএনবি চাঁদপুর ইউনিটের জন্য অফিস ও ১৫ জন আরএনবি সদস্য বসবাসের উপযোগী সকল সুযোগ সুবিধাদিসহ ব্যারাক নির্মাণ প্রসঙ্গে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো। একই সাথে দায়িত্ব পালনকালে কেউ কোন অসাধু উপায় অবলম্বন করার তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজু