
ছবিঃ সংগৃহীত
হার্ট অ্যাটাক শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে ভয় চলে আসে, কিন্তু বাস্তবতা হলো—বেশিরভাগ মানুষ জানতেই পারে না কখন তাদের হার্টে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ প্রথমবার হার্ট অ্যাটাক না হওয়া পর্যন্ত বুঝতেই পারেন না যে তাদের রক্তনালীতে ব্লক তৈরি হয়েছে। অথচ সময়মতো জানা গেলে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ সম্ভব।
রক্তনালী ব্লক হয়ে গেলে কী লক্ষণ দেখা দেয়?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, রক্তনালীতে যদি ৭০% বা তার বেশি ব্লক তৈরি হয়, তখন দৈনন্দিন কিছু কাজেই শরীর সংকেত দিতে শুরু করে।
✔ আগে যেখানে সহজেই হাঁটতেন, এখন হাঁটলেই বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভব হচ্ছে।
✔ সিঁড়ি ভাঙতে গেলে শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড়, ঘাম বা হাঁপানির মতো অনুভূতি হচ্ছে।
✔ শরীরের চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন না পৌঁছালে বুকের মাঝখানে চাপ বা ব্যথা হয়—এটি বাম বা ডানদিকে হতে পারে না বরং মাঝখানে বা পুরো বুকজুড়ে হয়।
✔ এই ব্যথা চোয়াল বা বাম হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
✔ অনেক সময় এই ব্যথা জ্বালাপোড়ার মতো হয়, অনেকেই এটিকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে ভুল করেন।
ঝুঁকিতে থাকলে কী করবেন?
যারা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান করেন বা পরিবারে কারও হৃদ্রোগের ইতিহাস আছে, তারা বেশি ঝুঁকিতে। এছাড়া বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে বিশেষ সতর্ক থাকা দরকার।
✅ ট্রেডমিল টেস্ট (ETT): ব্যায়ামের সময় ইসিজি করে দেখা যায় হার্টে কোনো সমস্যা আছে কি না।
✅ লিপিড প্রোফাইল: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা মাপা উচিত।
✅ রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
✅ স্মোকিং ছেড়ে দিন: এটি হৃদ্রোগের সবচেয়ে বড় কারণগুলোর একটি।
✅ সঠিক ওজন বজায় রাখা: BMI ২৩.৫ এর নিচে রাখার চেষ্টা করুন।
✅ নিয়মিত হাঁটা: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০–৪০ মিনিট হাঁটলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
খাবারেও সচেতনতা দরকার
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে হৃদ্রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। প্রতিদিনের ডায়েটে থাকা উচিত—
🍎 পর্যাপ্ত ফলমূল ও শাকসবজি
🥬 কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন
🥖 বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার
🧂 কম লবণ ও চিনি
শেষ কথা
বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগ করে না এবং স্বাস্থ্যবীমা না থাকায় নিয়মিত চেকআপের প্রবণতাও কম। অথচ সচেতন হলে এবং প্রতিদিনের অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলেই হার্ট অ্যাটাকের মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
ইমরান