ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হৃদরোগের উপসর্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন? অবহেলা করলে দেখা দিতে পারে যেসব মারাত্মক জটিলতা

প্রকাশিত: ০৯:১০, ৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:১২, ৪ জুন ২০২৫

হৃদরোগের উপসর্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন? অবহেলা করলে দেখা দিতে পারে যেসব মারাত্মক জটিলতা

প্রথমে একটু ক্লান্তি, মাঝে মাঝে বুক ধড়ফড় করা, কিংবা হাঁটলে শ্বাসকষ্ট এমন উপসর্গগুলো অনেকেই গুরুত্ব দেন না। ভাবেন, ‘ঘুমালেই ঠিক হয়ে যাবে’, ‘বয়স হয়েছে তো!’ কিংবা ‘হয়তো গ্যাস্ট্রিক’। কিন্তু হৃদরোগ এমন একটি নীরব ঘাতক, যা প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলা করলে দিতে পারে জীবনঘাতী ধাক্কা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা না করালে হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। দেখা দিতে পারে নানা জটিলতা যা কখনো কখনো প্রাণঘাতীও হতে পারে।

হার্ট ফেইলিউর: যখন হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ে
হৃদযন্ত্রের পাম্প করার ক্ষমতা কমে গেলে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে রক্ত পৌঁছায় না। ফলে শুরু হয় একের পর এক জটিলতা শ্বাসকষ্ট, পা ফুলে যাওয়া, হঠাৎ ক্লান্ত হয়ে পড়া। এটি ঘটে হৃদপিণ্ডের দুর্বলতা, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, ভাল্বের সমস্যা বা সংক্রমণের কারণে।

হার্ট অ্যাটাক: সময়মতো রক্ত না পেলে হারিয়ে যেতে পারে হৃদপিণ্ডের টিস্যু
করোনারি ধমনীতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। সাধারণত অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বা রক্তনালিতে চর্বি জমে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর লক্ষণ যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যায়, ততই বাঁচার সম্ভাবনা বাড়ে।

স্ট্রোক: কয়েক মিনিটেই বন্ধ হতে পারে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা
হৃদরোগ থেকে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকাংশে। যখন মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়, তখন কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোষ ধ্বংস হতে শুরু করে। একবার স্ট্রোক হলে তা পঙ্গুত্ব কিংবা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

হঠাৎ হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া: সাইলেন্ট কিলার
‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ বা হঠাৎ হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া এটি এমন এক অবস্থা, যেখানে হৃদপিণ্ড হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেয়। রোগী মুহূর্তেই জ্ঞান হারান, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। এমন সময় তাত্ক্ষণিক সিপিআর এবং চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে প্রবল।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
হৃদরোগের এসব জটিলতা সময়মতো চিকিৎসা করলে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন? যদি আপনি বুক ধড়ফড়, হঠাৎ ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, বুকের চাপ বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ এগুলো শুধু হৃদরোগ নয়, অনেক সময় অন্যান্য জটিল সমস্যার পূর্বাভাসও হতে পারে।

বিশেষ করে যাদের পরিবারে কারও হৃদরোগের ইতিহাস আছে, তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত। কারণ আগেভাগেই হৃদরোগের ঝুঁকি শনাক্ত করা গেলে বড় বিপদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। সুস্থ হৃদয়ের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পরিমিত খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা রাখা জরুরি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের শরীরের ইশারা বুঝুন এবং অবহেলা করবেন না। প্রথম উপসর্গই হতে পারে শেষ সতর্কবার্তা।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/46fxkvkm

আফরোজা

×