
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনের প্রতি সংহতি প্রকাশে রাশিয়ান অস্ত্র দিয়ে তৈরি এক অনন্য ‘মুক্তির ঘণ্টা’ বৃহস্পতিবার চেক প্রজাতন্ত্রের একটি গির্জায় হস্তান্তর করেছেন নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা। ঘণ্টাটি তৈরি হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত আর্টিলারি গোলা ও অন্যান্য অস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে।
‘Bell of Freedom’ নামে পরিচিত ঘণ্টাটি তৈরি করেছে নেদারল্যান্ডসের বিখ্যাত ঘণ্টা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান Royal Eijsbouts। কোম্পানির মালিক জুস্ট আইসবাউটস বলেন, ‘এই ঘণ্টাটির মধ্যে অনেক প্রতীকী অর্থ রয়েছে। সহিংসতার জন্য তৈরি বস্তু দিয়ে শান্তির প্রতীক গড়া—এটা দারুণ এক ধারণা।’
ঐতিহাসিক ঘণ্টা, ঐতিহাসিক স্থান
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগ শহরের চার্চ অব দি হোলি সেভিয়র-এর ঘড়ির টাওয়ারে এই নতুন ঘণ্টাটি স্থাপন করা হবে। ওই টাওয়ারে আগে থাকা ঘণ্টা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সামরিক বাহিনী অস্ত্রে রূপান্তরের জন্য নিয়ে যায়। নতুন ঘণ্টাটি যেন সেই ইতিহাসের বিপরীত চিত্র তুলে ধরছে—যুদ্ধ থেকে শান্তির পথে।
ইউক্রেনের প্রতি বার্তা
চেক প্রজাতন্ত্র ও নেদারল্যান্ডস—উভয় দেশই রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে আসছে। এই ঘণ্টা সেই সমর্থনেরই এক প্রতীকী প্রকাশ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চেক প্রেসিডেন্ট পেতর পাভেল ও তাঁর স্ত্রী ইভা পাভেল।
তবে অনুষ্ঠানে ডাচ রাজা উইলেম-আলেকজান্ডারকে দেখা যায়নি। তিনি দেশের সরকারের পতনের কারণে সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার রাতে নিজ দেশে ফিরে যান। ফলে রাজকীয় এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রানি ম্যাক্সিমাই প্রতিনিধিত্ব করেন।
শান্তির বার্তা, প্রতিরোধের প্রতীক
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষকে শান্তির প্রতীকে রূপ দেওয়ার এই উদ্যোগ শুধু প্রতীকী নয়, বরং ইউরোপে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে একটি স্পষ্ট বার্তা—অস্ত্রের জবাব অস্ত্র দিয়ে নয়, বরং ঐক্য ও শান্তির মাধ্যমে।
চেক ও ডাচ জনগণের এই যৌথ উদ্যোগ প্রমাণ করে, যুদ্ধ শুধু ধ্বংস নয়, ইতিহাসের ঠিক মোড়ে দাঁড়িয়ে তা নতুন অর্থেও রূপ নিতে পারে।
সূত্র: এপি।
রাকিব