ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কফি পান করা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:২৯, ৫ জুন ২০২৫

কফি পান করা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

ছবি: সংগৃহীত

সকালের ঘুম তাড়াতে কিংবা ক্লান্ত বিকেলে একটু চাঙ্গা হতে অনেকেই বেছে নেন এক কাপ গরম কফি। শুধু স্বাদ নয়, কফি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি পানীয়—যার উপকারিতা নিয়ে যেমন আলোচনা আছে, তেমনি রয়েছে কিছু সতর্কবার্তাও। চলুন জেনে নেওয়া যাক কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আধুনিক গবেষণার আলোকে।


কফি খাওয়ার উপকারিতা

১. মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জোগায়

কফির মূল উপাদান ক্যাফেইন একটি প্রাকৃতিক উদ্দীপক, যা মস্তিষ্কের স্নায়ুকেন্দ্র সক্রিয় করে মনোযোগ, একাগ্রতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

২. ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা প্রতিরোধে সহায়ক

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণা বলছে, নিয়মিত ও সীমিত পরিমাণ কফি গ্রহণ করলে বিষণ্নতার ঝুঁকি ২০-৩০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস

কফি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা দেহের কোষকে ক্ষতিকর র‌্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করে, ক্যানসার ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

৪. টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়

গবেষণা অনুসারে, যারা নিয়মিত ১–২ কাপ কফি পান করেন, তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

৫. মেটাবলিজম ও ফ্যাট বার্নে সহায়ক

ক্যাফেইন শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা ওজন কমাতে এবং শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।


কফি খাওয়ার অপকারিতা

১. ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রা

বেশি কফি খেলে ঘুমে বিঘ্ন ঘটতে পারে, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন গ্রহণ করলে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।

২. অতিরিক্ত উদ্বেগ বা নার্ভাসনেস

অতিরিক্ত ক্যাফেইন উত্তেজনা ও মানসিক উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। যাদের আগে থেকেই উদ্বেগজনিত সমস্যা আছে, তাদের জন্য কফি সমস্যা বাড়াতে পারে।

৩. অ্যাসিডিটি ও পাকস্থলীর সমস্যা

খালি পেটে কফি খেলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, গ্যাস্ট্রিক কিংবা পাকস্থলীর প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ে।

৪. আসক্তি তৈরি করতে পারে

ক্যাফেইন একটি হালকা আসক্তিকর উপাদান। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে নির্ভরতা তৈরি হয় এবং হঠাৎ বন্ধ করলে মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।


কতটুকু কফি নিরাপদ?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও অন্যান্য গবেষণা অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য দিনে ৩-৪ কাপ (৪০০ মি.গ্রা. ক্যাফেইন) পর্যন্ত কফি নিরাপদ ধরা হয়। তবে গর্ভবতী নারী, উচ্চরক্তচাপ বা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

কফি যেমন উপকারী, তেমনি মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কফিকে রাখতে হলে মাত্রা মেনে চলা এবং সঠিক সময়ে গ্রহণ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

এক কাপ কফিতে সুস্থতা, তবে সীমার বাইরে গেলে হতে পারে বিপদ।

Mily

×