ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

লিভার নষ্ট হওয়ার আগেই খেতে শুরু করুন এই ৭টি খাবার!

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ১৪ মে ২০২৫

লিভার নষ্ট হওয়ার আগেই খেতে শুরু করুন এই ৭টি খাবার!

আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। প্রায় ৩ পাউন্ড ওজনের এই অঙ্গটি একাই ৫০০-রও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।প্রোটিন হজম, খনিজ পদার্থ সংরক্ষণ, পিত্ত উৎপাদন, রক্ত পরিশোধন সবই এর দায়িত্বে। তাই লিভার ভালো রাখা মানে নিজের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখা।

এই বিষয়েই পরামর্শ দিয়েছেন জনপ্রিয় গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট ড. জোসেফ সালহাব, যিনি 'Dr. GI Joe' নামেও পরিচিত। ইনস্টাগ্রামে তার ১৩ লাখেরও বেশি অনুসারী। তিনি শুধু লিভার নয়, হজম, প্যানক্রিয়াস ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করেন। ড. সালহাব এমন কিছু মজাদার স্ন্যাকসের তালিকা দিয়েছেন, যেগুলো খেতে যেমন মজা, তেমনি লিভারও রাখবে চাঙা।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন ৭টি স্বাস্থ্যকর খাবার লিভার সুস্থ রাখতে সহায়ক-

১. তরমুজে লেবুর রস:চটপটে রিফ্রেশার!
ড. জোয়ের মতে, সাধারণ তরমুজকে আরও উপকারী করে তোলে লেবুর রস। এই মিষ্টি ও টক স্বাদের যুগলবন্দী শুধু মুখরোচক নয়, বরং লিভারের জন্যও দারুণ উপকারী। তরমুজে থাকা সিট্রুলিন রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে। আর লেবু ও তরমুজ দুটোতেই আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন C, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে লিভারকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে।

২. অ্যাভোকাডো টোস্ট, তবে সাওয়ারডো দিয়ে!
অ্যাভোকাডো টোস্ট লিভার ভালো রাখে? হ্যাঁ, যদি সেটি বানান সাওয়ারডো ব্রেড দিয়ে। সাওয়ারডো-র ফার্মেন্টেড বৈশিষ্ট্য অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়, যা সরাসরি লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত। অ্যাভোকাডোর স্বাস্থ্যকর চর্বি রক্তে চিনি ও ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যা ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমায়।

৩. কিমচি ও মিষ্টি আলুর জুটি: গাট হেলথের রাজা!
ফার্মেন্টেড খাবার কিমচি ও ফাইবারযুক্ত মিষ্টি আলুর এই জুটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম উন্নত করে। কিমচির প্রোবায়োটিকস ও মিষ্টি আলুর রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ লিভার ফ্যাট জমা হওয়া রোধ করে—বিশেষ করে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের ঝুঁকি কমায়।

৪. বাদাম দিয়ে দিনচর্চা শুরু:আখরোট ও কাজুবাদাম
ড. জোয়ের প্রিয় স্ন্যাকসের একটি-এক মুঠো আখরোট আর কাজুবাদাম। এতে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন E, যা লিভারে চর্বি জমা কমায় এবং কোষকে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন কিছু বাদাম খাওয়া মানেই দীর্ঘমেয়াদি লিভার হেলথ নিশ্চিত করা।

৫. ডার্ক চকলেট ও বেরি :স্বাস্থ্যকর মিষ্টি!
চকলেটপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর-ডার্ক চকলেটের সঙ্গে মিশিয়ে খান স্ট্রবেরি বা ব্লুবেরির মতো বেরি। দুটোতেই আছে ফ্ল্যাভোনয়েডস।শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লিভারের কোষকে দাগ পড়া বা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় এবং রক্তনালিকে ভালো রাখে।

৬. কিউই ও গ্রিক দই : শক্তির উৎস
কিউইতে থাকে ভিটামিন C ও পটাসিয়াম, যা লিভারের শক্তি উৎপাদন ও মেটাবলিজমের জন্য প্রয়োজনীয়। গ্রিক দইয়ের প্রোবায়োটিকস অন্ত্র সুস্থ রাখে, যা সরাসরি লিভারের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে।

৭. আপেলের সঙ্গে দারুচিনি:সুস্বাদু ও সাশ্রয়ী
আপেলে থাকে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভারে চর্বি জমা কমাতে সাহায্য করে। তার উপর যদি ছিটিয়ে দেওয়া যায় এক চিমটি দারুচিনি।তবে সেটি হয়ে ওঠে একেবারে ‘সুপার স্ন্যাক’। দারুচিনিতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান লিভারকে রক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদে।


লিভার সুস্থ রাখার জন্য কেবল বড় বড় ডায়েট নয়, বরং ছোট ছোট বুদ্ধিমানের মতো স্ন্যাকসও অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। মজাদার এই খাবারগুলো শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও পরিপূর্ণ। আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান, আজ থেকেই এই স্ন্যাকসগুলো যুক্ত করুন আপনার দৈনন্দিন রুটিনে!

 

 

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/4z3j2txh

আফরোজা

×