
ছবি: সংগৃহীত
এস এস সি পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেক দিন—খাতা গেছে বোর্ডে, ছুটে বেড়িয়েছে শিক্ষক থেকে কর্মকর্তার টেবিলে। আর এদিকে একটা গোটা প্রজন্ম প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠছে একটা কথার অপেক্ষায়: “রেজাল্ট কবে দিবে?”
অবশেষে সেই তারিখ—১০ জুলাই! সারাদেশে একযোগে ফলাফল প্রকাশ হবে। আর এই অপেক্ষার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে লাখো শিক্ষার্থী—কারও মনে হাসি, কারও মনে ভয়, কারও মনে অজানা অস্থিরতা।
কেউ ঘরে বসে বারবার ফোন হাতে নিচ্ছে, হয়তো স্ক্রিনে টাইম দেখে আবার রেখে দিচ্ছে। কেউ কেউ স্বপ্ন দেখছে কলেজের নতুন ক্লাস, কেউ কল্পনায় বুয়েট-ঢাবি-পাবলিক ভার্সিটির লোগো। কিন্তু কেউ আবার বিছানায় চুপচাপ—ভাবছে, "যদি না পাস করি?", "সবাই কি বলবে?", "আব্বু কি রাগ করবে?"
সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে রেজাল্ট জল্পনা– “আমার তো বাংলা খারাপ গেছে”, “গণিতে ভুল করেছি”, “শুনছি ফলাফলে কম দিচ্ছে।” বন্ধুদের মেসেঞ্জার গ্রুপেও আজকাল ঝিম ধরেছে—সবাই কেমন জানি চুপচাপ।
রেজাল্টের আগের দিন যেন পুরো একটা জাতি নিঃশ্বাস আটকে রাখে—শুধু ছাত্র না, বাবা-মা, শিক্ষক, ভাইবোন, প্রতিবেশী—সবাই দেখতে চায়: কে কেমন করল?
এই মুহূর্তে কিছু শিক্ষার্থী আছে, যারা জানে তাদের রেজাল্ট ভালো হবে—তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে কবে কলেজে ভর্তি হবে, কে কোন গ্রুপে যাবে। আবার কেউ কেউ অদৃশ্য এক ভয় নিয়ে কাঁপছে—“যদি ফেল করি?” “জীবন কি এখানেই শেষ হয়ে যাবে?”
কিন্তু এখানে একটু থেমে ভাবা দরকার— একটা ফলাফল হয়তো কিছু দিক ঠিক করে দেয়, কিন্তু জীবনের দিক ঠিক করে না। এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হলে, হ্যাঁ, মন খারাপ হবেই। পরিবার রেগে যাবে, বন্ধু দূরে যাবে, এমনটাও হতে পারে। তবে যেটা যাবে না—তোমার ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা।
এসএসসি পাস করো আর ফেল করো, তোমার সামনে এখনো বহু রাস্তা। কেউ কলেজে যাবে, কেউ ডিপ্লোমায় ভর্তি হবে, কেউ স্কিল শিখবে, কেউ অনলাইন ইনকাম করবে। কেউ হোঁচট খেয়ে শিখবে—দুনিয়া রেজাল্ট দিয়ে চলে না, চেষ্টা দিয়ে চলে।
তুমি যাই করো, একটা কথা ভুলবে না— তোমার রেজাল্ট তোমাকে মানুষ বানায় না, তোমার মনোভাব, তোমার সাহস, তোমার লড়াই—তোমাকে মানুষ করে।
১০ তারিখ আসুক। রেজাল্ট আসুক। কেউ হাসবে, কেউ কাঁদবে, কেউ ভাববে “ভালো হলো”, কেউ বলবে “আরো ভালো হওয়া উচিত ছিল”— কিন্তু একটা কথা সবাই মনে রাখবে: এই শুরু, শেষ না। তুমি জিততেই পারো, একটু সময় নিয়ে।
রিফাত