
ছবি: সংগৃহীত
গত ৮ বছরে মামলার খরচের নামে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (কেবি) ফান্ডের প্রায় ৩৩ লাখ টাকা হরিলুট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের খবরে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে-বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদ বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. জি.এম মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সম্প্রতি এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২৭ লাখ এবং পরবর্তী সময়ে আরও কয়েক লাখ টাকা মামলা খরচ দেখিয়ে কলেজ ফান্ড থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানান কলেজের বতর্মান অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান। তবে এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি বিষয়টি স্পষ্ট করে বলতে পারবে বলেও জানান তিনি।
অধ্যক্ষ বলেন, এর আগে ২০২২ এবং ২৩ সালে এ ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ওই রিপোর্টগুলোতে মামলা খরচ বাবদ অস্বাভাবিক খরচের বিষয়টি উঠে আসে। তবে প্রতিবেদনে কোনো ধরনের সুপারিশ না থাকায় সম্প্রতি ওই তদন্ত কমিটি নতুন করে রিভিউ করা হয়। বর্তমানে এই কমিটির তদন্ত কাজ চলমান আছে।’
এ কারণে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেন এবং হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মো: আবু তাহেরের পেনশন আটকে আছে বলেও জানান অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান। তবে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে বিষয়টি সুরাহা করা হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান বিএনপির সমর্থক হওয়ায় ২০১৬ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ইস্যু সৃষ্টি করে তাকে বরখাস্ত করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আদালতে মামলা দায়ের করলে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ এই মামলার খরচ দেখিয়ে গত ৮ বছরে প্রতিষ্ঠানের ৩৩ লাখ টাকা উঠিয়ে নেয়। তবে ওই মামলায় আদালত অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমানের পক্ষে রায় প্রদান করে স্বপদে পুর্নবহালের আদেশ দেন।
এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিএম. আব্দুল্লাহ রনি, আনোয়ার মাসুদসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তরা। তারা বলেন, কলেজ একটি সম্মিলিত প্রতিষ্ঠান। এখানে ব্যক্তি আক্রোশের কারণে কলেজ ফান্ডের বিশাল অঙ্কের টাকা অপচয় কোনভাবেই কাম্য নয়। শুনেছি ভুয়া বিল-ভাউচারে এই টাকা নয় ছয় করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত বলেই আমরা মনে করি।
তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. জি.এম মজিবুর রহমান বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে। ইতোমধ্যে মামলা খরচ বাবদ ৩৩ লাখ টাকার উত্তোলনের তথ্য প্রমাণ আমরা হাতে পেয়েছি। তবে কলেজ ফান্ডের টাকা অপচয়ের দায় কার- এ বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে জানা যাবে।
কলেজ পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য অনুষদ বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, তদন্ত কমিটি স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করছে। আপাতত এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে প্রতিবেদন হাতে পেলে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসিফ