ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিএনপির নিলুফার চৌধুরী

‘কেউ আন্দোলন করেছে বলে তাকে কি রাষ্ট্র দিয়ে দেবেন?’

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ২৮ মে ২০২৫

‘কেউ আন্দোলন করেছে বলে তাকে কি রাষ্ট্র দিয়ে দেবেন?’

ছবি: সংগৃহীত।

বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে বলেন, “কেউ আন্দোলন করেছে বলে তাকে কি রাষ্ট্র দিয়ে দেবেন?”

টকশোতে উপস্থাপক দ্রুত ভোটের ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন করে বলেন, “দ্রুত ভোট আপনারা চান। সারজিস আলম বলছেন দ্রুত ভোট দিলে ভোটটা ভালো হবে না। এটা একটা কলঙ্কের ভোট হবে।”

তিনি আরও বলেন, “দলের মার্কা না থাকা দল নির্বাচন করতে পারে না। নিবন্ধনবিহীন দলের কথা বাদ দিয়ে, নিবন্ধনপ্রাপ্ত দলগুলো কী বলে? বিশেষ করে বিএনপি কী বলে? কিন্তু রাষ্ট্র তাদের গুরুত্ব দেয়।”

নিলুফার মনি যোগ করেন, “আপনারা সাতদিন এপয়েন্টমেন্ট না পেয়ে যখন পেয়েছেন, সেই দিনও প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এটা রাষ্ট্রের বিবেকের কাছে কি ঠিক? রাষ্ট্রের প্রধান মানুষটা উৎখাত হলেও রাষ্ট্র আবার কোটার আমদানি করছে।”

তিনি প্রশ্ন তুলেন, “রাষ্ট্র কেন তাদের মূল্যায়ন করে? কারণ রাষ্ট্রের কর্ণধার তার দলের রাজা; তাই রাজা দলেরকেই রাষ্ট্র মূল্যায়ন করে।”

নিলুফার বলেন, “আপনারা কথাবার্তা বলবেন, আমরা যেমন বলছি, আপনারাও এইভাবেই তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের এতো প্রাধান্য কেন?”

তিনি আরো বলেন, “বিএনপি জামাতকে প্রথম দিনে ডেকেছে, যদিও জামাতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। জামাতকে মেনে নেওয়া হলো কারণ এটি পুরানো দল। কিন্তু এনসিপি অনিবন্ধিত দল, গঠনতন্ত্রও নেই। তাদের ডাকার কারণ কী? গণঅভ্যানে তাদের ভূমিকা অস্বীকার করছেন?”

নিলুফার বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা, যারা ৯০-এর আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, ভাষা আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্র পেয়েছেন। আন্দোলনের জন্য নাকের বদলে নুরুল দেওয়ার কথা বলছেন? এটা তো হতে পারে না।”

তিনি আরো বলেন, “ছাত্ররা পড়াশোনা করতে চায়, কিন্তু বর্তমানে পড়াশোনা নিয়ে কোনো কথা নেই। বরং পাস-ফেইলকে সহজ করার সংস্কৃতি চালু হয়েছে।”

নিলুফার প্রশ্ন তুলেন, “কোটা বিরোধী আন্দোলনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বিশেষ সুবিধা পাবে—আপনারা এ বিষয়ে কী বলবেন?”

তিনি জানান, “আহত ও শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন দরকার, আমরা একমত। তবে কোটার মাধ্যমে পুনর্বাসন দেওয়া উচিত নয়। এটা আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে মানায় না।”

নিলুফার আশা করেন, “এই সেশনেই কোটা থাকবে, ভবিষ্যতে বাতিল করা হবে। এরপর হয়তো আর রাস্তায় বসতে হবে না।”

এ সময় তিনি আরও বলেন, “আপনারা অনিবন্ধিত দল, ড. ইউনূসের দলকে ‘রাজার দল’ বলছেন। ড. ইউনূস কমস কম এনসিপির পদে নেই। আপনারা নিজের দলের ইতিহাস ও লিগ্যাসি নিয়ে বলার সময় সতর্ক হোন।”

তিনি উল্লেখ করেন, “একই সময়ে প্রেসিডেন্ট ও দলের প্রধান ছিলেন। মেজর জিয়া একই সময়ে দেশের প্রধান ও বিএনপির প্রধান ছিলেন। এটা বিশ্বাসঘাতকতা নয়।”

নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, “নিজেদের ইতিহাস ভুলে গেলে দলের প্রতিও বিশ্বাসঘাতকতা হয়।”

নুসরাত

×