ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কিশোরগঞ্জে সড়কে ধস, জনদুর্ভোগ চরমে- হুমকিতে বসতবাড়ি

সোহেল রানা, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২৮ মে ২০২৫

কিশোরগঞ্জে সড়কে ধস, জনদুর্ভোগ চরমে- হুমকিতে বসতবাড়ি

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ভারি বর্ষণে গ্রামীণ পাকা সড়ক নালায় ধসে গিয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। সংস্কারের অভাবে সড়কটি দিন দিন ভেঙে গিয়ে সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় চলাচলে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধান, ভুট্টা পরিবহনসহ পথচারী, স্কুলকলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

অপর দিকে সড়ক সংলগ্ন কয়েকটি কাঁচা-পাকা বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে হুমকির মুখে পড়েছে। এতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন ওই পরিবারের লোকজন। এ অবস্থায় অতিদ্রুত ধসে যাওয়া সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ সড়কটির অবস্থান উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের বাড়িমধুপুর কোটিয়ালপাড়া গ্রামে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই গ্রামের অহেদুল গোয়ালের বাড়ির মোড় সংলগ্ন গ্রামীণ পাকা সড়কটি ভারি বর্ষণে নালায় ধসে গিয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি সড়কটির বিশাল অংশজুড়ে নালায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে টিকে থাকা ২/১ হাত প্রশস্ত সড়ক দিয়ে চলছেনা কোন যানবাহন। 

এদিকে এলাকাজুড়ে ধান-ভূট্টা কাটা-মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম চলছে। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় এসব কৃষিপণ্য শ্রমিকের কাঁধে পরিবহণ করায় কৃষকদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ ও সময়। এছাড়াও শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, পথচারীরা আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে চলাচল করছে। মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 

সম্প্রতি সময়ে বসতবাড়ি রক্ষা ও জনভোগান্তি লাঘবে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শরিফুল ইসলাম ধসে (বিলীন হয়ে) যাওয়া সকড়টি মেরামতের জন্য আবেদন করলেও অদ্যাবধি কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়নি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। তিনিসহ এলাকার বাসিন্দারা অতিদ্রুত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি স্থায়ীভাবে মেরামতের দাবি জানান। 

শরিফুল ইসলাম বলেন, নিতাই দাঙ্গা পাড়া থেকে নিতাই ইউনিয়ন পরিষদ যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়াও তারাগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাটবাজার এ সড়ক দিয়ে হাজার হাজার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিবার ভারি বর্ষণে সড়কটির একই স্থানে নালায় ধসে যাওয়ায় এসব যাতায়াতকারী মানুষজনকে চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিকল্প পথে ১০ থেকে ১৫ কি:মি: ঘুরতে হয়। তাই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ীভাবে মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।


স্থায়ী বাসিন্দা লাতিফুল সাফি ডায়মন বলেন, ‘সড়কটি আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ। চলমান ভারি বর্ষণে এ সড়কের বিশাল অংশজুড়ে নালায় বিলীন ও ধসে গিয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার মত। এ অবস্থায় কৃষিপণ্য পরিবহনে ও যাতায়াতে হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। সঠিক সময়ে সড়কটি মেরামত না করায় দিন দিন ভাঙন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ সড়ক সংলগ্ন কয়েকটি কাঁচা-পাকা বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। তাই দ্রুত সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হক বলেন, ‘সড়কটি মেরামতের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নিবেন বলে তিনি জানান।’

উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এক ইউপি মেম্বারকে সড়কটি মেরামতের জন্য দিয়েছেন। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে সড়কটি মেরামতের প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

মিরাজ খান

×