ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তাহেরপুর কলেজের অভিযাত্রা: অতীতের সংগ্রাম, ভবিষ্যতের আশ্বাস

আশরাফুল ইসলাম অন্তর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, বাগমারা, রাজশাহী 

প্রকাশিত: ০০:৪০, ২৫ মে ২০২৫

তাহেরপুর কলেজের অভিযাত্রা: অতীতের সংগ্রাম, ভবিষ্যতের আশ্বাস

দৈনিক জনকণ্ঠ

রাজশাহীর বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর এবং নাটোর উপজেলার সীমানা ছুঁয়ে থাকা ঐতিহাসিক তাহেরপুরে গড়ে ওঠা তাহেরপুর কলেজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি উত্তরবঙ্গের শিক্ষা-আন্দোলনের এক দীপ্ত নিদর্শন। 

পাঠান জায়গীরদার তাহের খানের স্মৃতি বিজড়িত এই জনপদে, বঙ্গের ইতিহাসখ্যাত রাজা কংস নারায়ণের সুপ্রাচীন রাজপ্রাসাদের চত্বরে ১৯৬৭ সালের ২ মার্চ সকাল ১১টায় কলেজটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

শিক্ষা বিস্তারের তাগিদেই এই অঞ্চলের বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা পায় তাহেরপুর কলেজ। এক ঝাঁক স্বপ্নবান মানুষের দৃঢ়তা ও নিরলস পরিশ্রমেই সম্ভব হয় এ মহতী উদ্যোগ।

যাঁরা ছিলেন কলেজ প্রতিষ্ঠার অগ্রনায়ক তাহেরপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব নূও মুহাম্মদ খাঁ, শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম খন্দকার আফছার আলী, কিসমত গনকৈড় ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম দায়েম উদ্দিন সরকার, নওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিন সর্দার, শিলমাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম নমির উদ্দিন ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. আয়ুব আলী, গোয়ালকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন প্রাং, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রেফাজ উদ্দিন সরকার।

তাঁদের পাশাপাশি ছিলেন সমাজের বিভিন্ন পেশার শিক্ষানুরাগী ও গণ্যমান্য ব্যক্তি মথুরাপুর নিবাসী মাস্টার শহিদ বেচয়েন উদ্দিন শাহ্, স্বর্গীয় বাবু নব কুমার শাহা, বাবু তেজেশ চন্দ্র রায়,  মরহুম ইয়াছিন আলী সর্দার, তৎকালীন তহশিলদার মো. খাইরুল আলম, বাবু মনি রায়, বাবু নারায়ণ চন্দ্র সাহা, শহিদ মাস্টার রহিম উদ্দিন শাহ্, নবীর উদ্দিন প্রাং, মরহুম মাস্টার রিয়াজ উদ্দিন সরকার, এবং কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জনাব শাহ মো. জাফরুল্লাহ, যাঁর দায়িত্বকাল ছিল ১৯৬৭ সালের ১ জুন থেকে ১৯৭০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

তাদের ঐকান্তিকতায় গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এলাকার ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘদিন ধরেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।

তাহেরপুর কলেজের প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন, তাঁরা অনেকেই আজ আমাদের মাঝে নেই। তবে তাঁদের দূরদর্শিতা, নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের ফলেই আজকের এই প্রতিষ্ঠান। তাঁদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

একটি শিক্ষিত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হওয়া তাহেরপুর কলেজ আজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি উত্তরবঙ্গের শিক্ষার বাতিঘর। ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠান আরও উচ্চতায় পৌঁছে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখবে এই প্রত্যাশাই সকলের।
 

হ্যাপী

×