
শব্দর্থগুলো জেনে নেই :
গুহা – নিভৃত স্থান।
সলা-পরামশর্ – আলাপ-আলোচনা।
আস্তানা – বসবাসের স্থান।
বরণ – সাদরে গ্রহণ।
ভায়া – ভাই।
মস্ত – বিশাল।
অসীম – অশেষ।
জোর – ক্ষমতা/শক্তি।
হাজির – উপস্থিত
উদগ্রীব – খুব আগ্রহী।
ঝাঁপ – লাফ।
তলিয়ে – ডুবে।
২। বিপরীত শব্দগুলো জেনে নেই :
ক) লম্বা– খাটো। খ) শক্তিশালী – দুর্বল
গ) নিরীহ – উদ্ধত। ঘ) মুক্ত – বদ্ধ
ঙ) নিশ্চিন্ত – চিন্তিত।চ) সভ্য – অসভ্য
৩। যুক্তবর্ণগুলো ভেঙে বাক্য তৈরি করি :
ক) ঙ্ক = ঙ + ক - সুমিত অঙ্ক ভালো বোঝে।
খ) ক্ক = ক্্ + ক - ছেলেটির বুদ্ধি পরিপক্ক হয়েছে।
গ) ক্ষ = ক্্ + ষ - শীতকালে ত্বক রুক্ষ হয়ে ওঠে।
ঘ) ঙ্গ = ঙ + গ - মিলি মিতার সঙ্গে কথা বলছে।
ঙ) ন্দ = ন্ + দ - শান্ত মেয়ে সবার পছন্দ।
চ) ক্ত = ক্ + ত - পশুদের মধ্যে সিংহ সবচেয়ে শক্তিধর।
৪। ক্রিয়াপদগুলোর চলিত রূপ জেনে নেই :
ক) ঢুকিয়া – ঢুকে
খ) হইতেছে – হচ্ছে
গ) কাটিতেছিল – কাটছিল
ঘ) শুনিয়া – শুনে
ঙ) করিলেন – করলেন
চ) পিষিয়া – পিষে
হাতি ও শিয়ালের গল্প
৫। একদিন শিয়াল ভয়ে ভয়ে হাজির হলে হাতির আস্তানায়। লেজ গুটিয়ে একটা সালাম দিল। বলল, আপনিই তো বনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। আপনিই আমাদের রাজা। ওই দেখুন। নদীর ওপারে সবাই উদগ্রীব হয়ে বসে আছে। আপনাকে রাজা হিসেবে বরণ করে নিতে চায় সবাই। হাতি তো শিয়ালের কথা শুনে মহা খুশি। আচ্ছা চল। নদীর পারে এসে শিয়াল বলল, এই আমি নদী সাঁতরে পার হচ্ছি। আপনিও আশুন। এই বলে শিয়াল নদীতে ছিল ঝাঁপ। হাতি ভাবল, পুঁচকে শিয়াল যদি নদী পার হতে পারে, আমি পারব না কেন? সেও নদীতে নেমে পড়ল। কিন্তু মস্ত বড় তার শরীর আর কী ভারী। হাতিটা নদীর পানিতে পা দিল। অমনি তার ভারী শরীর একটু একটু করে তলিয়ে যেতে থাকল। তলিয়ে যেতে যেতে হাতি বলল, শিয়াল ভায়া, আমাকে বাঁচাও। শিয়াল ততক্ষণে নদী পার হয়ে তীরে উঠে এসেছে। বনের সমস্ত প্রাণী তার পেছনে এসে দাঁড়াল। শিয়াল হাতিকে বলল, তোমাকে বাঁচাব আমরা? এতদিন তোমার অত্যাচারে আমরা কেউ বনে শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি।
(খ) নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নেই ঃ
i) শিয়াল হাতির আস্তানায় গিয়েছিল কেন? ২টি বাক্যে লেখ।
উত্তর ঃ হাতির অত্যাচারে বনের সবাই অস্থির ছিল। তাই হাতিকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই শিয়াল হাতির আস্তানায় গিয়েছিল।
ii) নদীর ধারে গিয়ে হাতির কী বিপদ হলো? ৪টি বাক্যে লেখ।
উত্তর ঃ হাতির সাথে থাকা পুঁচকে শিয়াল সাঁতরে নদী পার হয়ে গিয়েছিল। তাই দেখে হাতিও নদীতে নেমে পড়ল। সে ভুলে গিয়েছিল তার মস্ত শরীর নিয়ে সাঁতার কাটতে না পারার কথা। ফলে সে আস্তে আস্তে ডুবে যেতে শুরু করল।
iii) হাতিকে কেই বাঁচাতে না আসার ৪টি কারণ লেখো।
উত্তর ঃ হাতিকে কেউ বাঁচাতে না আসার ৪টি কারণ নিম্নে দেওয়া হলো ঃ
১। হাতিটা বনে এসে সব তোলপাড় করে দিয়েছিল।
২। তার তর্জন-গর্জনে সবাই আতঙ্গিত হয়ে পড়েছিল।
৩। হাতিটার ভয়ে বনের কেউ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি।
৪। হাতিটার কারণে বনের শান্ত পরিবেশ হয়ে পড়েছিল অশান্ত।
৬। প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নেই
ক) বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে আসার কারণ কী?
উত্তর ঃ অনেকদিন আগে বেশ শান্তিতেই বনের পশুদের দিন কাটছিল। হঠাৎ একদিন প্রকা- শরীরের তিরিক্ষি মেজাজের একটা হাতি বনে ঢুকে পড়ল। হাতিটা বনে ঢুকে তুলকালাম কান্ড শুরু করল। বনের সব প্রাণীদের ওপর তার অত্যাচার বেড়েই চলল। তার আচরণ দেখে মনো হলো, সে-ই বনের রাজা। তার এ ধরণের আচরণের কারণেই বনের পশুদের ওপর অশান্তি নেমে এলো।
খ) গল্পে মুক্ত স্বাধীন বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর ঃ গল্পে হাতির অত্যাচারে যখন সবাই অতিষ্ট হয়ে পড়ল সে সময় বুদ্ধিমান শিয়াল হাতিটাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটি উপায় বের করল। প্রকান্ড শরীরের হাতিটা শিয়ালের ফাঁদে পা দিয়ে নদী পর হতে গিয়ে আর উঠতে পারল না। এভাবে বনের সব প্রাণীরা অত্যাচারী হাতি থেকে রক্ষা পেল। সকলেই সমন্বরে বলতে লাগল আমরা এখন মুক্ত স্বাধীন।
গল্পে মুক্ত স্বাধীন বলতে হাতির অত্যাচার থেকে বনের অন্যান্য প্রাণীদের রক্ষা পাওয়াকে বোঝানো হয়েছে।
ঘ) অহংকারী ও অত্যাচারীর পরিনাম শেষ পর্যনত কী হয়?
উত্তর ঃ অহংকারী ও অত্যাচারীর পরিনাম খুবই ভয়াবহ হয়। তার বিপদে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না। অহংকারী ও অত্যাচারীকে কেউ পছন্দ করে না।
ঙ) সবাই মিলে শিয়ালকে দায়িত্ব দিল কেন?
উত্তর ঃ শিয়ালকে অধিকতর বুদ্ধিমান মনে করায় সবাই মিলে তাকে দায়িত্ব দিল। হাতির অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বনের সব পশুরা একদিন সিংহের গুহায় জড়ো হয়। সবাই শলা-পরামর্শ করে শিয়ালকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও উপযুক্ত মনে করে। এ কারণেই সবাই মিলে দায়িত্বটি শিয়ালকে দিল।