ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

শোকের দিনে পরীক্ষা নয়:শিক্ষানীতিতে মানবিক সংস্কারের দাবি বাংলাদেশ গণশক্তি দলের

আব্দুল্লাহ আল নোমান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, হবিগঞ্জঃ

প্রকাশিত: ০১:৫৪, ২৭ জুন ২০২৫; আপডেট: ০১:৫৫, ২৭ জুন ২০২৫

শোকের দিনে পরীক্ষা নয়:শিক্ষানীতিতে মানবিক সংস্কারের দাবি বাংলাদেশ গণশক্তি দলের

পাবলিক পরীক্ষার দিনে স্বজন হারানো শিক্ষার্থীদের জন্য পুনঃপরীক্ষার সুযোগ চালুর আহ্বান জানালো বাংলাদেশ গণশক্তি দল।

বাংলাদেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে (SSC, HSC, Alim ও সমমান) প্রায় প্রতি বছরই ঘটছে এক হৃদয়বিদারক চিত্র-পরীক্ষার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে অনেক শিক্ষার্থীর মা, বাবা বা নিকট আত্মীয় মৃত্যুবরণ করেন। কেউ পরীক্ষা দিতে পারে না, কেউবা লাশ ঘরে রেখে চোখের অশ্রু মুছে পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয়। কিন্তু শোকবিধ্বস্ত মানসিক অবস্থায় তারা স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দিতে না পারায় ভালো ফলাফল থেকে ছিটকে পড়ে।

এই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ গণশক্তি দল (বিজিডি) বলেছে,"শোকের দিনে পরীক্ষা নয়। স্বজন হারালে শিক্ষার্থীকে সুযোগ দিতে হবে পরবর্তীতে আলাদা প্রশ্নে বিশেষ পুনঃপরীক্ষার।"

উক্ত দাবিকে সামনে রেখে দলটির প্রস্তাবনা গুলো হলো-

পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থীর মা/বাবা/অভিভাবক/নিকট আত্মীয় মৃত্যুবরণ করলে, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ (ডেথ সার্টিফিকেট, হাসপাতাল কাগজ) উপস্থাপন সাপেক্ষে ঐ পরীক্ষাটি স্থগিত করার সুযোগ দেওয়া হোক।

পরে বোর্ডের অধীনে আলাদা প্রশ্নে একটি ‘বিশেষ পুনঃপরীক্ষা’ (Deferred Exam) নেওয়া হোক।

পরীক্ষার্থী যাতে সময়মতো রেজাল্ট পায়, সে অনুযায়ী দ্রুত মূল্যায়নের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।

এই সুযোগের অপব্যবহার রোধে কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের কমিটি গঠন করা হোক।

বাংলাদেশ গণশক্তি দলের পক্ষ থেকে এক বিশেষ বিবৃতিতে জানানো হয়,“একজন শিক্ষার্থী যখন জীবনের সবচেয়ে বড় শোকের দিন মা বা বাবার মৃত্যুদিনে কলম হাতে পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়, তখন তা শুধুই একটি প্রাতিষ্ঠানিক অবিচার নয়, বরং এক নির্মমতা। আমরা চাই শিক্ষাব্যবস্থায় মানবিকতা ফিরুক, নম্বর নয় মানুষ আগে বিবেচিত হোক।”

দলটি আরও জানায়, উন্নত বিশ্বের বহু দেশে (যেমন যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া) রয়েছে Deferred Exam ব্যবস্থা। বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের মানবিক ব্যতিক্রমের কোনো সুযোগ না থাকায়, শিক্ষার্থীরা নিজের দুঃখ বা শোক নিয়ে লড়তে লড়তেই শিক্ষাজীবন থেকে ছিটকে পড়ে।

সরকার ও শিক্ষা বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলটি জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় শিক্ষানীতির সাথে সংশ্লিষ্ট মহল যেন এই প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হোক।

সামাজিক, শিক্ষাবিদ, অভিভাবক ও রাজনৈতিক মহল সবাইকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে বিজিডি আহ্বান জানায়।


বাংলাদেশ গণশক্তি দল ঘোষণা করেছে, তারা শিগগিরই এই দাবিকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর অভিযান,অভিভাবক সমাবেশ,শিক্ষার্থীদের মতামতভিত্তিক প্রচারনা,সামাজিক সচেতনতা তৈরির ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালু করবে।

আফরোজা

×