কিডস রাইটসের সংবাদে মাইনুল

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাইনুল ইসলাম। বয়স ১৬। বর্তমানে সে লক্ষ্মীপুর জেলার হায়দরগঞ্জ তাহেরিয়া আর এম কামিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন। স্কুল জীবন থেকেই বিভিন্ন সহ-শিক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন মাইনুল। অনেকদিন থেকে বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করার মাধ্যমে সহশিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। স্কিল ডেভেলপমেন্ট, কমিউনিকেশনস, টেকনোলজি এসবের উপরে বিভিন্ন ধরনের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

শিশুদের জন্য প্রযুক্তিকে কিভাবে আরও কল্যাণকর করা যায় সে চেষ্টা ছিল মাইনুলের। সে আরেকটি প্রতিষ্ঠান ‘মেন্টর মশাই’ তে কাজ করার সময় লক্ষ্য করেন অনেক শিশু-কিশোর ইন্টারনেটে যুক্ত। এক গবেষণায় দেখা যায় তারা ভিডিও দেখে বেশি। সেখান থেকে তার কিছু সহকর্মীসহ ২০২০ সালে শিশুদের জন্য আলাদা একটি ভিডিও প্লাটফর্ম তৈরি করার ভাবনা আসে। যার নাম বেবিটিউব। মাইনুল পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ এবং বিভিন্ন সেমিনারে ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা নিয়ে কর্মশালা পরিচালনা করেন।

পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সম্পর্কিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকে। সম্প্রীতি, মাইনুলের ইসলামের কাজের প্রসংশা করে শিশুদের সহায়তা এবং এ্যাডভোকেসি আন্তর্জাতিক সংস্থা কিডস রাইটসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মাইনুল ইসলাম সম্পর্কে বলা হয়েছে, মাইনুল বাংলাদেশের ঢাকা থেকে ১৬ বছর বয়সী একজন পরিবর্তন নির্মাতা। তিনি তার দেশের শিশুদের ইন্টারনেট নিরাপত্তার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন।

ইন্টারনেটে শিশু-কিশোরদের সচেতনতা বাড়াতে তিনি বিভিন্ন প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি শিশু এবং যুবকদের জন্য একটি নিরাপদ ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম চালু করেছেন যার মাধ্যমে তিনি নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন। এ্যাপটি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন যে কোন ধরনের আপত্তিজনক এবং বিরক্তিকর বিষয়বস্তুকে ফ্ল্যাগ করে। তিনি ডিজিটাল পরিষেবাগুলো ব্যবহার করার সময় শিশুদের মঙ্গল রক্ষার জন্য একটি আকর্ষণীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন হল নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অবস্থিত একটি শিশুদের সহায়তা এবং এ্যাডভোকেসি সংস্থা। ফাউন্ডেশনটি ২০০৩ সালে মার্ক দুলার্ট এবং ইনেগ ইকিংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিডস রাইটস রাশিয়া, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ফিলিপাইনসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে স্বতন্ত্র স্থানীয় সহায়তা প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। সংস্থাটি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ডেসমন্ড টুটুকে উদ্ধৃত করে বলেছে, কিডস রাইটস পুরোপুরি নির্বাককে কণ্ঠ দেয়ার চেষ্টা করছে।

সংস্থার লক্ষ্য হল বিশ্বজুড়ে দুর্বল শিশুদের সহায়তা ও ক্ষমতায়ন করা, ছোট-ছোট স্থানীয় প্রকল্পগুলোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে শিশুদের অধিকারের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা।