ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জনতা ব্যাংকের আরও চার ঋণখেলাপি গ্রেপ্তার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ৪ জুন ২০২৩

জনতা ব্যাংকের আরও চার ঋণখেলাপি গ্রেপ্তার

.

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নানা ছুতোয় যেসব গ্রাহক দিনের পর দিন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেননি, এবার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংক থেকে বার বার তাদাগা দেওয়ার পরও কিস্তি না দিয়ে খেলাপিরা এতদিন ধরে নিয়েছিলেন ব্যাংকের টাকা আর ফেরত দিতে হবে না। এসব ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে জনতা ব্যাংক। সম্প্রতি ঢাকার নওয়াবগঞ্জ শাখা, দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর শাখা, দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ রোড শাখা, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ শাখার মোট চার খেলাপী গ্রাহক গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর আগে জনতা ব্যাংকের বেশকিছু খেলাপি গ্রাহক গ্রেপ্তার হন। আদালত ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নওয়ারগঞ্জ শাখার গ্রাহক সাজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. এনামুল হক ব্যাংকের ৩৪ লাখ টাকা পরিশোধ না করে নানা ছুতোয় সময় ক্ষেপণ করছিলেন। বিতরণ করা ঋণের টাকা না পেয়ে পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থঋণ আদালতে ৬৮০/২০২০ নং অর্থজারি মামলা দায়ের করে। আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে সাজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. এনামুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সম্প্রতি হাজারিবাগ থানা পুলিশ এক অভিযানের মাধ্যমে এনামুলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর শাখার খেলাপি গ্রাহক মো. মোতালেব খানের কাছে সুদাসলে ব্যাংকের পাওনা তিন কোটি সাত লাখ টাকা। তিনি আল ইমরান রাইস এজেন্সি, প্রভা ট্রেডার্স এবং প্রভা ব্রিক্স এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণ নেন। ব্যাংকের শাখা থেকে বার বার যোগাযোগ করেও মোতালেবের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ আদায়ে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা (০৭/২০১৪) দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মোতালেবের বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাকিমপুর থানা পুলিশ গত শনিবার অভিযান চালিয়ে রংপুর থেকে মোতালেবকে পলাতক থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার করে। দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ রোড শাখার খেলাপি গ্রাহক মো. হাফিজুর রহমানের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইভানা ট্রেডার্সের কাছে বর্তমানে বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। ঋণটি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দিনাজপুরের অর্থ ঋণ আদালত- মামলা (নম্বর ৩০-১৮) দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত হাফিজুরের বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। চিরিরবন্দর থানা পুলিশ সম্প্রতি নিজ বাড়ি থেকে হাফিজুরের গ্রেপ্তার করে।   

জনতা ব্যাংকের পঞ্চগড় দেবীগঞ্জ শাখার অপর খেলাপি গ্রাহক মির্জা হাবিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠান মির্জা হাবিব ব্রাদার্স এর নামে মোট পাওনা ৪৫ লাখ টাকা। গ্রাহককে ব্যাংক থেকে তাগাদা দেয়ার পরও কোনো সাড়া মেলেনি। খেলাপির বিরুদ্ধে ব্যাংক ০৩/১৫ এবং ৫৭/১৫ নম্বর মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মির্জা হাবিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সম্প্রতি ইশ^রদী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মির্জা হাবিবকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।     

যোগাযোগ করা হলে ব্যাপারে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মো. আব্দুল জব্বার বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনাসহ ব্যাংকের অন্যান্য সূচকের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আমরা ইতিমধ্যে ১০১ দিনের বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যেসব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘ সময় ধরে ঋণ পরিশোধে সময় ক্ষেপণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

×