
আমাদের শৈশব ছিল আনন্দময়। তখনকার শিশু-কিশোর নানা রকম খেলাধুলায় ব্যস্ত ছিল। এখন তো সেই খেলাধুলা হারাতে বসেছে। খেলাধুলার বদলে শিশু-কিশোর ঝুঁকে পড়েছে মোবাইলের দিকে। ইন্টারনেট আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেখানেই যাবেন প্রতিটা শিশুর হাতে এখন মোবাইল ফোন। অবুঝ শিশুরা ইন্টারনেটে ঢুকে পড়ছে অবাধেই। তাদের জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপই এখন এই ইন্টারনেটকেন্দ্রিক। ছোট্ট অবুঝ শিশুটাও ইউটিউবে না ঢুকলে ভাত খাবে না। ইন্টারনেট আসক্তির কারণে তাদের খেলাধুলার প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে। অনলাইনেই বসেই তারা খেলাধুলা করছে। খেলাধুলা না করার কারণে তাদের মনোদৈহিক উন্নতি হচ্ছে না। তাদের শারীরিক মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশু-কিশোররা খিটখিটে এবং বদমেজাজি হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন ঘরে বসেই অনেক কিছু শেখা যায়। বিশেষ করে করোনার সময়ে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের সুফল পেয়েছিল। পাশাপাশি অধিক ইন্টারনেট আসক্তির কারণে ক্ষতিও হচ্ছে। মনের অজান্তে তারা বিভিন্ন প্রাপ্তবয়স্কদের সাইটে ঢুকে পড়ছে। নানা ভাবে যৌন নিপীড়নের শিকারও হচ্ছে। তা ছাড়া নানাভাবে সাইবার উৎপীড়নের শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন করে অনেক শিশু- কিশোরই ইন্টারনেটে ঢুকছে। পৃথিবী তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই। গ্রামগঞ্জেও এখন ইন্টারনেটের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। কিন্তু শিশু-কিশোরদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের সেই সুবিধা নেই। ইন্টারনেটকে পুঁজি করে শিশু-কিশোররা নানা রকম অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। এসব গ্যাংয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা ও ঘটেছে। আর এসব অপরাধের ছক এঁকেছে ওরা ইন্টারনেটে বসেই। এই সমস্যা সমাধানের জন্য অবশ্যই নিরাপদ ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবারের লোকজন বিশেষ করে বাবা-মা তাদের সন্তানদের নজরদারিতে রাখতে হবে। সামাজিকভাবে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকরা একটা ভাল ভূমিকা রাখতে পারে। সর্বোপরি আমাদের সবার উচিত শিশু-কিশোরদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপারে চেষ্টা করা।
কুমিল্লা থেকে