ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শরীয়তপুরে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনে ভাঙ্গছে নদী ও খাল

প্রকাশিত: ১১:০২, ২০ অক্টোবর ২০২১

শরীয়তপুরে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনে ভাঙ্গছে নদী ও খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর ॥ শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিভিণœ স্থানে নদী, খাল ও ফসলী জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ঠান্ডারমোড় ও বড়সুন্দি, বিনোদপুরের চরের কান্দি ও জনুল্লা মাদবর কান্দি, মাহমুদপুর, ডোমসারে মুন্সীরহাট ও গঙ্গানগর এলাকাসহ প্রায় ১০টি স্থানে কীর্তিনাশা ও পদ্মার শাখা নদী, খাল ও ফসলী জমিতে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে অবাধে বালু ও মাটি উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। মাহমুদপুরের হারুন, চন্দ্রপুরের রাজিব, বিনোদপুর এলাকার মোখলেছসহ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, এসব অবৈধ ড্রেজিং ব্যবসার সাথে সদর উপজেলার গঙ্গানগর এলাকার এসকেন্দার, চন্দ্রপুরের ঠান্ডারমোড় এলাকার আব্দুর রব ও মৌলভীকান্দি এলাকার সোহাগ জড়িত রয়েছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের ভয়ে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা দিনের বেলায় তাদের মেশিন বন্ধ রাখে, রাত হলেই শুরু করে বালু আর মাটি উত্তোলন। নদী, খাল ও ফসলী জমি থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে নদী ও খালের পাড় ধসে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ খাল ও নদী গর্ভে হারাচ্ছে তাদের ঘর-বাড়ি, বসত-ভিটা ও ফসলী জমি। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র নদী ও খাল থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাংগন, ধসে পড়ছে খালের পাড়। একদিকে বালুদস্যুরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা, অন্য দিকে নদী ভাংগনে ঘর-বাড়ি, বসত-ভিটা ও ফসলী জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন সড়কের উপর ড্রেজিংয়ের পাইপ বসানোর কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন ঘর-বাড়ির উপর দিয়ে ড্রেজিংয়ের মোটা মোটা পাইপ বসানোর কারণে অনেক সাধারণ মানুষের দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় তহশীলদারদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বছরের পর বছর এ অবৈধ কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ফলে জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দ্বারাই থামানো যাচ্ছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ। বছরের পর বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অবৈধ কাজটি চললেও প্রশাসন অনেকটা নির্বিকার। তবে প্রশাসন বলছে, তারা ভ্রম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ড্রেজিংয়ের সাথে জড়িতদের জেল-জরিমানা ও মেশিন জব্দ করাসহ পাইপ কেটে ধ্বংস করছেন। তারপরও থামছে না এ অবৈধ কাজটি। এসব বিষয় সম্পর্কে ড্রেজার ব্যবসায়ী এসকেন্দার, আব্দুর রব ও সোহাগের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বালু ও মাটি উত্তোলনের কথা স্বীকার করে তারা বলেন, কি কাজ করে খাবো, এ ব্যবসাটা দিয়ে সংসার চালাই। আমাদের ক্ষতি কইরেন না। বিষয়টি বিনোদপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহাবুব আলম ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসর মনদীপ ঘরাইকে স্থানীয় সাংবাদিকরা অবহিত করলে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
×