ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যশোরে ৬৮২ শিক্ষকের ক্লাসে যাওয়া নিষেধ

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

যশোরে ৬৮২ শিক্ষকের ক্লাসে যাওয়া নিষেধ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে এখনও ১১শ’ ৭২ শিক্ষক করোনার টিকা গ্রহণ করেননি। এদের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে রয়েছেন ৬শ’ ৮২ জন। চার শ’ ৯০ জন আছেন প্রাথমিকে। মাধ্যমিক পর্যায়ের যেসব শিক্ষক এখনও টিকা গ্রহণ করেননি তাদের শ্রেণীকক্ষে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র অফিসকক্ষে থাকবেন তারা। প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিষয়ে কোন প্রকার নির্দেশনা নেই। তারা প্রথম দিন থেকেই ক্লাসে যাচ্ছেন। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষকরা যোগাযোগ করলে তাদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ অবস্থায় অভিভাবকদের কেউ কেউ সন্তানদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করে ক্লাসে গেলে শিক্ষার্থীদের জন্যে ঝুঁকি কম থাকবে। করোনার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় এমনিতেই অভিভাবকরা নানা শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসা, সকল শিক্ষক করোনার টিকা নিয়েছেন কিনা। যদি না নিয়ে থাকেন তাহলে শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে গেলে কোন ধরনের সংক্রমণ তৈরি হবে কিনা। এ ধরনের প্রশ্ন করেছেন যশোর শহরের ইনস্টিটিউট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মা জাহানারা খাতুন ও সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক নুর আলী। সন্তানদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত এসব অভিভাবক। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে সকল শিক্ষকের করোনার টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করার কথা ছিল। কিন্তু, যশোরের এক হাজার এক শ’ ৭২ শিক্ষক এখনও টিকা নেননি। টিকা না নেয়া শিক্ষকদের অনেকেই স্কুলে যাচ্ছেন। মিশছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। নিচ্ছেন ক্লাসও। যশোর জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জেলায় মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৪ হাজার ৮শ’ ৬ জন। এরমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ৭ হাজার ৪শ’ ১৬ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ হাজার ৩শ’ ৯০ জন। সংশ্লিষ্ট দফতরের তথ্যানুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গত ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিকা গ্রহণের জন্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৭ হাজার ২শ’ ১৩ জন। আর রেজিস্ট্রেশন করেননি ২শ’ ৩ জন। রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষকদের মধ্যে টিকা গ্রহণ করেছেন ৬ হাজার ৯শ’ ২৬ জন। মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলায় শিক্ষক রয়েছেন ৭ হাজার ৩শ’ ৯০ জন। এদের মধ্যে ৬ হাজার ৭শ’ ৮ জন টিকা গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী, জেলায় এখনও পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬শ’ ৮২ জন শিক্ষক টিকা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম বলেন, ‘যেসব শিক্ষক এখনও টিকা নেননি তাদের শ্রেণীকক্ষে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসকক্ষে থাকবেন তারা। টিকা না নেয়া শিক্ষকদের মধ্যে মাতৃত্বকালীন অবস্থা, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, উচ্চ রক্তচাপ, দুগ্ধদানকারী মা এবং জটিল রোগে আক্রান্তরা রয়েছেন।’ প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘যেসব শিক্ষক এখনও টিকা নেননি তাদের মোটিভেশন দেয়া হবে। যারা যৌক্তিক কারণ ছাড়া টিকা নিচ্ছেন না তাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হবে আইনগত ব্যবস্থা।’ টিকা না নিয়ে ক্লাসে যাওয়া প্রসঙ্গে কথা হয় সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষক রেজিস্ট্রেশন করেছেন তারা এলে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। টিকা না নেয়ার পরও শিক্ষকরা যদি স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়িভাবে পালন করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের কোন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে না।’ শতভাগ টিকা নিশ্চিত হলেই খুলবে ইবি ইবি সংবাদদাতা জানান, শতভাগ টিকা নিশ্চিত হলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলে দেয়া হবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাদের এনআইডি নেই তাদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়া, প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় রংপুরে ২ প্রধান শিক্ষককে শোকজ নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর থেকে জানান, কাউনিয়াতে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে শিক্ষার্থীদের মাস্কবিহীন পাঠদান করায় পাঠোয়ারীটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর সাব্দী মৌলটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তাদের আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার কাউনিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ সরকার বলেন, সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করা, শ্রেণীকক্ষে গাদাগাদি পাঠদান ও বিদ্যালয় ভবন অপরিষ্কার রাখার কারণে পাঠোয়ারীটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হককে রবিবার বিকেলে শোকজ করা হয়েছে।
×