ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আষাঢ়স্য প্রথম দিবসেই দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১৬ জুন ২০২১

আষাঢ়স্য প্রথম দিবসেই দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ষাকালের অর্থাৎ আষাঢ়ের প্রথম দিনেই মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি দিয়েই শুরু হয় সকাল। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এভাবে কখনও ভারি, কখনও মাঝারি আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। তবে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কোথাও জলাবদ্ধ হয়নি। এক দিকে বৃষ্টি ও অন্যদিকে যানজটের কারণে রাজধানীর কর্মব্যস্ত মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। আষাঢ়ের প্রথম দিনে বৃষ্টির শব্দেই মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সকালে অফিসমুখী মানুষগুলো ছুটে চলেন নিজ নিজ গন্তব্যে। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন সংখ্যা কম থাকায় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া গুনে তাদের অফিসে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে সকাল থেকেই যানজট শুরু হওয়ায় কর্মব্যস্ত মানুষগুলোকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। একদিকে যানবাহন কম ও অপরদিকে যানজট থাকায় কর্মস্থলমুখী মানুষগুলোকে রাস্তায় রাস্তায় অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিশেষ করে বাস স্টেশনগুলোতে ভিড় লেগে যায়। এর ফলে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে যাত্রীদের বাসে উঠতে হয়েছে। এ পরিস্থিতি কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই নিজ নিজ কর্মস্থলে গিয়েছেন। আবার কর্মস্থল থেকে ফিরতি যাত্রায়ও তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আষাঢ় মাসের প্রথম দিন থেকেই সারাদেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আষাঢ়ের টানা বৃষ্টির যে ধরন, তা বোঝা যাবে আগামী কয়েকদিনে। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও রয়েছে অতি ভারি বর্ষণের আভাস। আবহাওয়া অধিদফতরে কর্মরত আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টার পর রাজধানীসহ ঢাকার বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি শুরু হয়। থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় রাজধানীবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সাগরে লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে দেশজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বুধবার এ বৃষ্টি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। আবহাওয়াবিদ মোঃ আব্দুর রহমান খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম ঝাড়খন্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল। বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অসম পর্যন্ত। আবহাওয়াবিদ মোঃ আব্দুর রহমান জানান, এছাড়া মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজমান। এ অবস্থায় বুধবার সকাল নাগাদ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুক্রবার নাগাদ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। আবহাওয়া অফিসের দেয়া বুলেটিন থেকে জানা যায়, সাগরে লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সমুদ্রবন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আষাঢ়ের শুরুতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। আবহাওয়া অফিসের সেই পূর্বাভাস সত্য প্রমাণিত হয় মঙ্গলবার সকাল ৬টার কিছু পর থেকেই। অবশ্য এবারের আষাঢ়ের পদধ্বনি কিছুদিন আগ থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। জ্যেষ্ঠের শেষ দিক থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার আষাঢ়ের প্রথম দিনই সারাদেশে বৃষ্টি হয়।
×