ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার জনগণের ওপর শাটডাউন চাপিয়েছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১৪ এপ্রিল ২০২১

সরকার জনগণের ওপর শাটডাউন চাপিয়েছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লকডাউনের নামে সরকার জনগণের ওপর শাটডাউন চাপিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন কিভাবে হবে এ বিষয়ে সরকারের কোন রোডম্যাপ নেই। স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনে দুঃসময় নেমে এসেছে। তাই জীবনযুদ্ধে টিকতে না পেরে তারা গ্রামে ছুটছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলাসহ বর্তমান সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ। কিসের লকডাউন? লঞ্চ, বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। কাজ ও খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে এসব মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। ফখরুল বলেন, আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না, আমরা বলছি অকার্যকর একটা শাটডাউন এটা। যে যেভাবে পারছে এদিক সেদিক যাচ্ছে। পোশাক কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। মূলত সরকারের কোন সমন্বয় নেই, কোন পরিকল্পনা নেই, রোডম্যাপ নেই। এই যে ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন তার পরে কি হবে সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। সরকারের প্রতিষ্ঠান টিসিবি রমজানে আগে নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে দিত। কিন্তু এবার টিসিবি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া বাজারে বরাবরের মতো এবারও সিন্ডিকেট সব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। চাল, ডাল, তেল, সবজি, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, খেজুর সবকিছুর দামই এখন ক্রয়সীমার বাইরে। দাম নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তবে আমাদের সময়ও এমন অবস্থা ছিল না তা বলব না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে না। ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিল, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। আর এখন চালের দাম কত সবাই জানে। এটার একটা উদ্যোগও তারা নিয়েছিল, তবে সাধারণ মানুষ নয় আওয়ামী লীগের লোকজন এর সুবিধা পেয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে নানা ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধীদলকে দমনে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতি চরম পর্যায়ে যাওয়ার কারণে, একদলীয় শাসনের কারণে প্রশাসনসহ কোথাও সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির যারা বড় ব্যবসায়ী ছিলেন তারা গত কয়েক বছরে নিস্ব হয়ে গেছে। সারা দেশে এ করুণ চিত্র। যারা ঢাকা শহরে মোটরসাইকেলে রাইডিং করে তারা গ্রাম থেকে এসেছে একটু আয়ের আশায়। তাদেরও আজ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই লকডাউনের মধ্যেও বিরোধীদল ও মতের লোকদের দমন করা হচ্ছে। বাক স্বাধীনতার অধিকার সবার আছে, অথচ সরকার বিরোধী মত দমন করতে একের পর এক আইন করছে। তবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোন সরকার টিকে থাকতে পারেনি, এ সরকারও টিকে থাকতে পারবে না। তাই সরকারকে আমরা আবারও আহ্বান জানাই জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। করোনা মোকাবেলায় সর্বদলীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। অতীতে আমরা সরকারে ছিলাম সেই হিসেবে বলতে চাই যে, এখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকারকে বলব আপনারা প্রত্যেকটা এলাকায় জাতীয় কমিটি গঠন করেন। সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন, এনজিও ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করুন। বাংলাদেশে তো ইতিহাস আছে, আমরা বন্যার সময় কিভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করেছি। আমরা কিভাবে সাইক্লোন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেছি তা সবাই জানে। সেভাবেই যদি সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে করোনা মোকাবেলায় সফলতা পাওয়া যাবে। ফখরুল বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এবার সম্ভবত করোনার দক্ষিণ আফ্রিকার যে ভেরিয়েন্ট, সেই ভেরিয়েন্ট ঢুকে পড়েছে। এই ভাইরাস প্রচ-ভাবে সংক্রামক। এই ভাইরাসের আক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। তবে টেস্ট এখনও তেমনভাবে হচ্ছে না। আমার একটা অভিজ্ঞতার কথা বলছি, আমার বাসায় যারা কাজ করেন তাদের টেস্ট করানোর জন্য আামি তিনদিন ধরে চেষ্টা করছি। তারা উত্তরায় একটা সেন্টারে যায়, প্রত্যেক দিন বলে যে, ফরম নাই টেস্ট করা যাবে না। পরে অবশ্য সিরিয়াল দিয়েছে টেস্ট করানোর জন্য। তিনি বলেন, ২০টি জেলায় করোনা টেস্টের কোন সুবিধাই নেই। এসব জেলার অধিবাসীদের অন্য জেলায় গিয়ে করোনা টেস্ট করতে হয়।
×