ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্ছেদের পর ফের দখল হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করবে ড্রোন

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২১

উচ্ছেদের পর ফের দখল হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করবে ড্রোন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা মহানগরীর উন্নয়নে যেখানেই কাজ করা হোক না কেন, সেখানেই অবৈধ স্থাপনা বা দখল পাওয়া যায়। তাই উচ্ছেদের পর আবার দখল করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতে ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে ড্রোনের সহায়তায় নজরদারি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদের জন্য কোন ধরনের নোটিস দেয়া হবে না। ডিএনসিসি দখলদারদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে বলেছেন তিনি। শুক্রবার দুপুর ১২টায় মিরপুর-১১ নম্বরের উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যাই ধরি, সেটাই অবৈধ। যে সড়কে যাই, সেখানেই অবৈধ দখল। যে খালে যাই, দুই পাড়ে অবৈধ দখল। অবৈধ দখলের ভিড়ে আমরা যারা বৈধ আছি, তারাই সংকুচিত হয়ে যাচ্ছি। সময় এসেছে, অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হতে হবে। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর পুনরায় দখল হয়ে যায়। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তুতি জানতে চাইলে ড্রোন ব্যবহারের কথা জানান আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কোথাও উচ্ছেদ অভিযানের পর আবার দখল হচ্ছে কী না সে বিষয়টি মনিটরিংয়ে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়ে আমি এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি। বিশেষ করে খালের দুই পাড় মনিটরিংয়ে ব্যবহৃত হবে ড্রোন। কারণ সব জায়গায় কিন্তু সব সময় যাওয়া যায় না। তাই ড্রোন দিয়ে দেখা হবে যে আবার দখল হয়েছে কী না। তার জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে। সেখান থেকে সবকিছু মনিটরিং করা হবে। আমরা ডিজিটাল হতে চাই। মেয়র আতিক বলেন, মিরপুর-১১ নম্বরের ৩ নম্বর এভিনিউয়ের ৪ নম্বর সড়ক থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে সুন্দর করে রাস্তা নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে ৩০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দিয়েছি। কারণ এ সড়কটি যোগাযোগের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটি সর্বনিম্ন ৬০ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ ফুট পর্যন্ত চওড়া হবে। গত বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ৮৫ শতাংশ উচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছিল। এরপরেও প্রয়োজন হলে কাল আবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে। মেয়র উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয় জনগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আতিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণের জন্য ঢাকা বিদ্যুত বিতরণ কর্তৃপক্ষকে (ডেসা) অবহিত করা হয়েছে। রাস্তা বর্ধিত করা হলে এসব বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দৃষ্টিকটু হবে, দ্রুত এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে। মেয়র বলেন, স্বাধীনতার পর ৪৯ বছর ধরে এই সড়কটি দখল করে রাখা হয়েছে, এটা উদ্ধার করা হচ্ছে। গতকাল ৮৫ শতাংশ উচ্ছেদ করা হয়েছিল, বাকিটার উদ্ধার কাজ চলছে। উচ্ছেদের পর এটা যাতে আর দখল না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে। তিনি বলেন, মিরপুর ১১ এর চার নম্বর এভিনিউয়ের উচ্ছেদ কার্যক্রম আরও কয়েকদিন চলবে। দখলদারদের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত রাস্তা ও ফুটপাথ দখল হয়ে যাচ্ছে। দখলদারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সিটি কর্পোরেশন মাঠে রয়েছে। সব ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাস্তাটি কয়েকদিনের মধ্যে পরিচ্ছন্ন করে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ করা হবে। রাস্তা থেকে শুরু করে খাল বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধ দখলদারদের কব্জায় চলে যাচ্ছে। অবৈধ দখলদারদের প্রতিরোধ করতে সব ধরনের নজরদারি থাকবে। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক প্রশস্ত করার জন্য রাজউকের জমিতে স্থাপনায় উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার যেসব ভবন অর্ধভাঙা হয়েছিল শুক্রবার তা সম্পূর্ণ ভাঙা হবে। সেইসঙ্গে স্থাপনার ভাঙা অংশ অপসারণ করা হবে। গতকাল চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। আজ শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন স্তূপ সরানোর প্রক্রিয়া চলছে। সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি দিয়ে করা হচ্ছে। সরজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর উচ্ছেদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। উচ্ছেদস্থলে পুলিশ মহড়া দিতে দেখা গেছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ডিএনসিসির পূর্বঘোষণা অনুযায়ী উচ্ছেদ করতে এলে দখলদারদের বাধা ও হামলার শিকার হয় পুলিশসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা। স্থানীয় বিহারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
×