ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জৈব সুরক্ষা বলয়ে মনোবিদ পাবেন ক্রিকেটাররা?

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

জৈব সুরক্ষা বলয়ে মনোবিদ পাবেন ক্রিকেটাররা?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ বছর মার্চের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেনি বাংলাদেশ দল। এই দীর্ঘ সময় ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলারই সুযোগ পেয়েছেন কম। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপে দীর্ঘ সময় ক্রিকেট কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকার পর সম্প্রতিই স্বল্প পরিসরে একটি ওয়ানডে আসর ও কিছুটা বড় পরিসরে টি২০ আসর খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। জানুয়ারিতে ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং ফেব্রুয়ারিতে ২ টেস্টের সিরিজ। দীর্ঘ ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাধ্যমে ফিরবে বাংলাদেশ দল। জমজমাট একটি আসর হয়েছে বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপ, তবে এই প্রস্তুতি দিয়েই এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে হবে ওয়ানডে ও টেস্ট। শারীরিক অবসাদ, জড়তা কাটিয়ে উঠলেও এখন জরুরী ক্রিকেটারদের মানসিক অবসাদ, অপ্রস্তুত মনোভাব, মানসিক জড়তা কাটিয়ে প্রফুল্ল হয়ে ওঠা। করোনা প্রটোকলে একটানা বন্দী থাকা অবস্থায় ক্রিকেটারদের জন্য তাই একজন মনোবিদের কাজ করাটা বেশ কার্যকর হতে পারে। বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ চৌধুরী নিজেই কিছুদিন আগে বলেছেন। করোনা বিরতি কাটিয়ে প্রথম বিদেশ সফর করে প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলা দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ড সফরে তারা জুলাইয়ে খেলে ৩ টেস্টের সিরিজ। এরপর তারা সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডও সফর করেছে। কঠোর স্বাস্থ্যনীতি মেনে, বায়ো সিকিউর বাবলের মধ্যে থেকে এই সময় আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলায় সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা এখন ক্যারিবীয়দের। এরপরও তারা এখন সার্বক্ষণিক একজন মনোবিদ রেখেছে দলের সঙ্গে। এমনকি বাংলাদেশ সফরেও তারা মনোবিদ রাখছে। কারণ সফরে কঠোর কোয়ারেন্টাইন নীতি মেনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট একটি গণ্ডিতে আবদ্ধ থেকে সিরিজ খেলতে হবে। এ জন্য ক্রিকেটারদের শারীরিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেয়া জরুরী। স্বাগতিক হলেও বাংলাদেশ দলেরও একই পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ক্যারিবীয়দের তুলনায় বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতাটা একেবারেই কম। শুধু বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে সিরিজ ও বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপে অংশ নেয়ার মাধ্যমে ক্রিকেটাররা এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতাটা নিতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামা হচ্ছে ভিন্ন মানসিকতা, ভিন্ন স্বাদ ও ব্যতিক্রমী প্রতিযোগিতা। আর টানা দু’টি সিরিজে একটি গণ্ডিবদ্ধ হয়ে ক্রিকেট খেলার পর ক্রিকেটারদের মানসিক অবসাদে ভোগাটাই স্বাভাবিক। এখন তাদের সতেজ, ফুরফুরে মানসিকতায় ফিরিয়ে আনতে একজন মনোবিদ খুব কার্যকর হতে পারেন। তাই ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে মোকাবেলায় নামার আগে একজন মনোবিদ প্রয়োজন হতে পারে বাংলাদেশ দলেরও। এ বিষয়ে ডাঃ দেবাশীষ বলেন, ‘অবশ্যই এটা ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে অনেক প্রভাবিত করছে। আইসিসি যখন এ বিষয়ে কথা বলেছে তারাও জানিয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ব্যবস্থাপনার চেয়েও জরুরী মানসিক ব্যবস্থাপনা। আর এ কারণেই এখন সবগুলো দলের সঙ্গেই জৈব সুরক্ষা বলয়ে একজন মনোবিদ থাকছেন। আমাদের এখনও এমন কোন পরিকল্পনা দেখছি না। কিন্তু যদি নিয়মিত এমন পরিস্থিতির মধ্যে খেলতে হয় তখন অবশ্যই একজন মনোবিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হবে আমাদের। এই সিরিজ পর নিউজিল্যান্ড সফরের আগে তেমন বিরতিই পাবেন না ক্রিকেটাররা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের এটা নিয়ে ভালভাবে ভাবতে হবে।’
×