ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কালুরঘাট রোড-কাম রেল সেতুর টোল আদায়ের লিজ নিয়ে কারসাজি

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৯ নভেম্বর ২০২০

কালুরঘাট রোড-কাম রেল সেতুর টোল আদায়ের লিজ নিয়ে কারসাজি

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে কালুরঘাট রোড কাম রেল সেতুর টোল আদায়ের লিজ নিয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে লিজ চুক্তির মূল্য কমিয়ে আবার পুনর্টেন্ডারে বৃদ্ধি করে এ ধরনের কারসাজি হচ্ছে বলে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) সূত্রে জানা গেছে। কারণ, গত অর্থবছর চার কোটি চার লাখ ৫০ হাজার টাকায় মোঃ আইয়ুব আলী নামে এক ব্যবসায়ীকে এ সেতুর টোল আদায়ের লিজ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু একই ব্যক্তি চলতি বছরের জানুয়ারিতে দরপত্রে মাত্র দুই কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার পাঁচ শ’ টাকা মূল্যায়ন করে দরপত্র দাখিল করেন। ফলে চলতি বছরের লিজমূল্য প্রায় অর্ধেকে নেমে আসায় কর্তৃপক্ষ টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, গত মার্চে পুনরায় টেন্ডারের পর আবার তা একই ঠিকাদার সাড়ে তিন কোটি টাকার ওপরে দরপত্র দাখিল করায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন এই ঠিকাদার। আরও অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার আইয়ুব আলী করোনার সময়ে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ৬৭ দিন মওকুফ চেয়ে রেলের রাজস্ব আয় হ্রাস করার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, চুক্তিপত্র স্বাক্ষর না করেই কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর টোল তুলছেন এই ঠিকাদার। দ্বিতীয় বারের টেন্ডার শর্তে সেতুর দুদিকে দুটি ওজন স্কেল স্থাপনের কথা থাকায় চতুর ঠিকাদার তা বাস্তবায়ন না করে ও চুক্তিপত্র সম্পাদন না করেই রেলের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে কিনা তা প্রশ্নবিদ্ধ। এক্ষেত্রে চুক্তি বাতিল করে আবারও টেন্ডার আহবান করা প্রয়োজন এমন দাবি অন্য ঠিকাদারদের। এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কঙ্কন চাকমা জনকণ্ঠকে বলেন, সেতুর ইজারা গ্রহীতা কয়েকটি পে-অর্ডারে গত মাসে ইজারা চুক্তিমূল্য পরিশোধ করেছেন। ঠিকাদারকে বার বার তাগাদা দেয়ার পরও এখনও পর্যন্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেনি। সেতুর দুই পার্শ্বে ওজন স্কেলও স্থাপন করেনি। ফলে চুক্তিশর্ত ভঙ্গ হচ্ছে। রেলের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারি শাখা লাইনের এ সেতু সড়ক ও রেলপথ দুটোই বিদ্যমান রয়েছে। গত অর্থবছরে এ সেতুর টোল আদায়ের জন্য রেলের পূর্বাঞ্চলীয় এস্টেট বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন চট্টগ্রাম স্টেশন রোডের হোটেল ইডেনে থাকা মোঃ আলী নামের এক ঠিকাদার। চার কোটি চার লাখ ৫০ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে এ লিজ দেয়া হয় এক বছরের জন্য। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে একই ব্যক্তি মাত্র দুই কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার পাঁচ শ’ টাকা মূল্যায়ন করে আগামী এক বছরের জন্য লিজ প্রাপ্তির চেষ্টা করেছেন। বিগত লিজ চুক্তির তুলনায় শতকরা প্রায় ৩৬ ভাগ কম মূল্যায়ন করেছেন। ফলে তৎকালীন প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইশরাত রেজা সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় টেন্ডারটি বাতিল করেন। আবার মার্চে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হলে একই ঠিকাদার তিন কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮৬ টাকা মূল্যায়ন হয়েছে। গত ২২ মার্চ টেন্ডারটি গৃহীত হয়েছে টেন্ডার কমিটি কর্তৃক। ২৪ মার্চ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চিঠি লেখা হয়েছে ঠিকাদারের কাছে। কিন্তু ঠিকাদার তা কানে তোলেননি। এমনকি টেন্ডারের পর আরও আট মাস পার হয়েছে। এতে টেনশনে আছে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি)।
×