ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজও দিনভর বৃষ্টি

ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা কেটে গেছে

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৪ অক্টোবর ২০২০

ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা কেটে গেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। চলছে অবিরাম বৃষ্টি। টানা বর্ষণের কারণে উপকূলীয় এলাকাসহ সারাদেশের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টিতে অনেক নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। উপকূলীয় জেলা শহরগুলোর রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। উঠতি খেতের ফসল ও হাজার হাজার মাছের ঘের ডুবে গেছে পানিতে। উপকূলের নিম্নাচল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। উপকূলে অধিকাংশ এলাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে ২৪ ঘণ্টায় ৩শ’ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন রুটে নৌযান চলাচলা। ফলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দুর্যোগে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সাগরের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি অনেকটা দুর্বল হয়ে বর্তমানে নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এটি শুক্রবার দুপুর থেকে দেশে খুলনা সাতক্ষীরা এবং সুন্দরবন অঞ্চল দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এদিন সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে। শরীয়তপুর মাদারীপুর অঞ্চল দিয়ে রাজধানীর পশ্চিম পাশ দিয়ে অতিক্রম করে চলে যায়। দেশের উপকূল অতিক্রমের সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানান নিম্নচাপটি স্থলভাগে উঠে আসার পর থেকে দুর্বল হতে থাকে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর এটি দুর্বল হয়ে ঢাকা পশ্চিম পাশ দিয়ে অতিক্রম করে চলে যায়। এর প্রভাবে আজ শনিবার দুপুর নাগাদ দেশের কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টিপাত হবে। এরপর থেকে বৃষ্টিপাত কমবে। তবে রবিবার পর্যন্ত কমবেশি বৃষ্টি হবে। সোমবার থেকে আবহাওয়া স্বভাবাবিক হবে। এদিকে নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে আসায় সমুদ্র বন্দর সমূহের উপর জারি করা সংকেত কমিয়ে আনা হয়েছে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের পরিবর্তে শুক্রবার তিন নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম বা তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ারও সতর্কতা জারি করা হয়। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার এবং গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এর প্রভাবে আজও ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক স্থানে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। এদিকে সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হয়েছে অবিরাম বৃষ্টির ধারা। কখনও তা মুষলধারে আবার কখনও গুঁড়ি বৃষ্টিপাত ছিল সারাদিন। ঢাকা আকাশের সারাদিন মেঘের ঘনঘটা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনের কারণে এদিন প্রয়োজন ছাড়াই কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। রাস্তায় লোকজনে এবং যানবাহন প্রয়োজনের তুলনায় ছিল অনেক কম। সারাদেশে সবাই ঘরবন্দী সময় পার করে পরিবার পরিজন নিয়ে। আবহাওয়া অফিস জানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বাইরে বের হওয়া মানুষ ব্যাপক ভোগান্তি পড়ে। এদিকে বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমে শীতল ভাব বিরাজ করছে। শীতের আগেই শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। রাজধানীর পাশিপাশি উপকূলীয় এলাকায় টানা বর্ষণের জীবনযাত্রা ভীষণভাবে থমকে দাঁড়িয়েছে। নিম্নচাপে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এখানে সর্বোচ্চ ২৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। এছাড়া পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিসে হিসাব অনুযায়ী নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, সীতাকুন্ডু, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মাইজদী কোর্ট, ফেনী, হাতিয়া, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া ও টেকনাফের ভারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর বাইরে খুলনা, মংলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, খেপুপাড়া ও ভোলায়ও ভারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রাও কমে এসেছে অনেক। রাজধানীর ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৫ এবং সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সারাদেশের ভারি বৃষ্টিপাত ভোগান্তি চট্টগ্রাম ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবারও চট্টগ্রামে ছিল ভারি বর্ষণ। আগের দিন রাত থেকে শুরু করে পরদিন বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেনি যানবাহন। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় জনভোগান্তি ছিল কম। বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ১৮২ মিলিমিটার। সাধারণত বছরের এই সময়ে এত বৃষ্টিপাত হয় না। একটানা ভারি বর্ষণের ফলে মহানগরীর আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকা, ছোটপুল, মুরাদপুর, শুলকবহর, কাপাসগোলা, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জসহ নিচু এলাকাগুলোর সড়ক পানিতে ডুবে যায়। এর ফলে অনেক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে। এতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। তবে বিকেল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। এদিকে, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট বৃহস্পতিবার প্রত্যাহার হলেও প্রবল বৃষ্টির কারণে বহির্নোঙ্গরে পণ্য লাইটারিং হতে পারেনি। কারণ, পানি প্রবেশ করে পণ্য বিনষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকায় জাহাজগুলোর হ্যাচ খোলা যাচ্ছিল না। তবে বিকেল থেকে সীমিত পরিসরে লাইটারিং শুরু হয়। অভ্যন্তরীণ জলপথে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। পটুয়াখালী ॥ তিনদিন ধরে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। কখনও ভারি আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত চলছে। গত বুধবার মধ্যরাত থেকে টানা বর্ষণের ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার পটুয়াখালীর গত ৪ বছরের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা ছিল পটুয়াখালীর গত ৪ বছরের ইতিহাসের ২৪ ঘণ্টার জন্য সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। ভোলা ॥ উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় টানা ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। বৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বের হতে পারছে না। শহরের রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার মন্ডপগুলোতে বৃষ্টির পানিতে ক্ষতি হয়েছে। দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। রাস্তাঘাটে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ভোলা থেকে বরিশাল, লক্ষ্মীপুরসহ অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলায় ১২৬.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বরিশাল ॥ দু’দিনের ভারি বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে নগরীসহ দশ উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল। এছাড়াও বৃহস্পতিবার রাত থেকে আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকায় বেশির ভাগ এলাকার বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নগরীর পলাশপুর, বালুর মাঠ কলোনি, কেডিসি, চরের বাড়িসহ নগরীর একাধিক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদররোড, প্রেসক্লাব আগুরপুর সড়ক, বটতলা, চৌমাথা, বাংলাদেশ ব্যাংক বরিশাল আঞ্চলিক শাখা সড়ক, ভাটিখানায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে পথচারীরা। শুক্রবার সকাল নয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটের সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বরিশাল অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ঝালকাঠি ॥ শুক্রবার সকাল থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে দমকা হাওয়া। এদিকে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ঢুকে পড়েছে শহরের রাস্তাঘাট, ফসলের খেত ও মাছের ঘেরে। ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে ১৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চাঁদপুর ॥ ভারি বর্ষণের কারণে চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে চলাচলকারী ছোট লঞ্চগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে। চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ জানান, গতকাল থেকেই আবহাওয়া ভাল না থাকায় শুক্রবার সকাল থেকে চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ রুটের সব কটি লঞ্চ চলাচল পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে চাঁদপুরে থেমে থেমে আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল নেই বললেই চলে। বাগেরহাট ॥ দুই দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে এবং নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার শতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চিতলমারী, রামপাল, কচুয়া, মংলা, মোরেলগঞ্জ, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও বাগেরহাট সদর উপজেলার দুই হাজারের অধিক পুকুর ও চিংড়ি ডুবে গেছে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে চাষীদের সূত্রে জানা গেছে। মৎস্য চাষীরা হাপিত্যেশ করছেন। এবারের বৃষ্টিতে সাম্প্রতিককালের ঘূর্ণিঝড় আমফান ও বুলবুলের চেয়ে মৎস্য খাতে ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। জেলার নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব স্থানে সরকারী-বেসরকারী অফিস, রাস্তা-ঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-মাদ্রাসা, বাড়ি-ঘর, বীজতলা, পানবরজ ও ফসলের খেত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরের রাস্তায়ও জমেছে পানি। অনেক পরিবারের রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। বসতঘরে পানি উঠে ফ্রিজ-টিভিসহ দামী আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছে। এসব এলাকায় পানীয়-জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে, জেলার প্রতিটি নদ-নদীতে তীব্র স্রোত ও অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। বলেশ্বর, পশুর, পানগুছি, চিত্রা, ভৈরব, মধুমতি, দঢ়াটানাসহ প্রতিটি নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে। মাদারীপুর ॥ বৈরী আবহাওয়ার কারণে পদ্মা নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। এজন্য কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে কখনও মশুলধারে কখনও গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এসব নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ কাঁঠালবাড়ি লঞ্চঘাট পরিদর্শক। এছাড়া নাব্য সঙ্কটের কারণে এই নৌপথে ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। হাতিয়া ॥ নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে মূল ভূখন্ডের সব ধরনের নৌ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত মানতে হবে সবাইকে। সকাল থেকে মশুলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ধমকা হাওয়া বয়ে যেতে দেখা গেছে। গ্রামের অনেক সড়কে গাছপালা পড়ে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আকাশ মেঘলা হয়ে অনেকটা অন্ধকার হয়ে গেছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
×